উপন্যাস “ডাঙ্গুলী” ----খোশবুর আলী ( পর্বঃ- “চৌদ্দ”)
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
উপন্যাস “ডাঙ্গুলী”
----খোশবুর আলী
পর্বঃ- “চৌদ্দ”
তারিখঃ ১৫/০৫/২০২০
রুমে ফিরে মনা তাঁর গায়ের ঘাম মুছল। কারন ফোনে বাবার সাথে কথা বলতে গিয়ে তাঁকে একটি মিথ্যা কথা বলতে হয়েছে।
তাঁর মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। মৌ শেষ পর্যন্ত আমাকে আমার বাবার নিকট মিথ্যাবাদি বানালো। যদিও বাবা বুঝতে পারেনি, কিন্তু আমি তো জানি।
মৌ এর প্রতি তাঁর ভিশন রাগ হল।
পরেরদিন প্রায়ভেট ক্লাস শেষে মনা বাহিরে দাঁড়িয়ে মৌ এর জন্য অপেক্ষা করছিল।
মৌঃ আসসালামু আলাইকুম, আজ মনে হচ্ছে আপনার মনটা খুব খারাপ?
মনাঃ ওয়ালাই কুমুস সালাম। তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
মৌঃ আমি জানি কি কথা , বলুন।
মনাঃ এখানে না।
মৌঃ কোথায়?
মনাঃ বাসায় যেতে যেতে বলছি।
মৌঃ রিক্সা নি, আমাকে আপনার বাড়ি পৌছিয়ে দেয়া হবে কথাও হবে।
মনাঃ ছিঃ ছিঃ কি বল? চাচী কি ভাববেন?
মৌঃ মা বরং আরও খুশি হবেন,
মনাঃ খুশি হবেন কেন?
মৌঃ কারণ, আমি একাই বাড়ি আসিনি, আপনি আমাকে পৌছিয়ে দিয়েছেন তাই।
মনাঃ না, তুমি একটু রাস্তার এপাশে এসো। হাঁটতে হাঁটতে কথা বলি।
তাঁরা দু’জনে পাশা পাশি হাঁটছিল, আর কথা বলছিল। তাদেরকে ফলো করছিল দুজন মাস্তান টাইপের ছেলে।ওরা হাঁটছিল আগে আগে আর ঐ ছেলে গুলো হাঁটছিল পিছে পিছে।
মনাঃ তুমি কাল চাচ্চুকে বলেছ আমি প্রায়ভেটে যায়নি। আর চাচ্চু আমার বাবাকেউ ফোন করে সব জানিয়ে দিয়েছে। আর সে জন্য বাবাকে আমার মিথ্যা বলতে হয়েছে। আমার সারা জীবনে একটিবারও মিথ্যা বলিনি। বাবা যদি জানতে পারেন কি ভাববেন বলতে পারো? এই পাপের ভার কে নিবে?
মৌঃ আমি যখন দোষ করেছি তখন আমি না হয় নেব। চাচ্চু আপনাকে কিছু বললে তাঁর জবাব আমি না হয় দেব।
মনাঃ জবাব তো আমিই দিয়েছি, কিন্তু সেটা মিথ্যা বলে। তোমার অনুষ্ঠান শেষে মেসে গিয়ে সেদিন রাতে আমার ভাল ঘুম হইনি। তাই দুপুরে ঘুমিয়ে পড়ার কারনে যেতে পারিনি আর তা নিয়ে এত হৈ চৈ ফেলে দিলে কেন?
মৌঃ বোঝেন না, কাছে রাখার জন্য।
মনাঃ ওহ, তাই তো বলি। এবার বুঝলাম। ঠিক আছে এখুন থেকে আমিও চেষ্টা করব কী করে তোমার থেকে দূরে থাকা যায়। এ পর্যন্ত তোমার সাথে আমার কথা শেষ। গুড বাই। বলে মনা তাঁর মেসের পথ ধরল।
মৌঃ আমাকে বাড়ি পৌছিয়ে দিবেন না?
মনাঃ নিজেই চলে যাও।
মৌ বাড়ির পথে পাঁ বাড়াতেই সেই মাস্তান ছেলে গুলি মৌ এর দিকে এগিয়ে গিয়ে একটু জোরেসোরেই বলল-
কি গো সুন্দরী? তোমায় ছেড়ে তোমার লাভার চলে গেল কেন? আমাদের হাত ধর, আমরা তোমাকে আর ছেড়ে যাব না। বলে মৌ-এর হাত ধরে টানতে লাগল। মৌ চিৎকার দিল। মনা ফিরে তাকাতেই দেখতে পেল সেই মাস্তান ছেলে গুলি মৌ-এর সাথে অসভ্যতা করছে।
মৌ আপ্রাণ চেষ্টা করছে তাঁর হাত ছাড়িয়ে নিতে কিন্তু পারছে না।
মনা আসছি দাঁড়া, বলে- মৌ এর দিকে ছুটে আসছিল, মনাকে ছুটে আসতে দেখে তাঁরা মৌ-এর হাত ছেড়ে দিল। মনা কাছে এসে ছেলে দুটির উদ্দেশ্যে বলল-
মনাঃ এই তোরা আমার বোনের হাত ধরেছিস কেন রে?
মাস্তান ছেলের একজন বলল-
ও আপনার বোন হয়, আমরা তো ভেবেছি বৌ। তাই আপনি যখন ছেড়ে গেলেন তখন আমরা গ্রহন করলে দোষ কোথায়?
অমনি মনা এক ঘুশি মারলো ছেলেটির মুখে, ঘুশি দিতে দেখে দ্বিতীয় জন দৌড়ে পালালো। এক ঘুশিতে নাকের বাঁসি ফেটে রক্ত ঝরতে লাগল, মনা বলল আর খাবি? ছেলেটি-- দেখে নেব তোমায়, বলে নাক মুছতে মুছতে চলে গেল।
এবার মনা আর মৌকে একা রাস্তায় ফেলে যেতে পারলো না।
মনাঃ আজকের ঘটনার কথা বাড়িতে বলবেনা, চাচা-চাচী টেনশান করবেন।
মৌঃ বলবনা ঠিক আছে, কিন্তু আমাকে প্রতিদিন বাসায় পৌঁছে দিতে হবে।
মনাঃ ঠিক আছে, পৌঁছে দেব।
মৌঃ কিন্তু আসার সময় কি হবে?
মনাঃ ওটা দিনের বেলা তেমন কিছু হবে না।কিন্তু সন্ধ্যার দায়িত্ত্ব আমার।
মৌঃ ঠিক আছে। আমাদের বাসায় থাকতে আপনার কিসের অসুবিধা?
মনাঃ অসুবিধা না, কিন্তু আমি তোমাদেরকে কষ্টে ফেলতে চাইছি না।
মৌঃ আমাদের কোন কষ্ট হবে না, একটা এক্সটা রুম আছে।এটাচ বাথরুম সহ।
মনাঃ তা আছে। কিন্তু----
মৌঃ কোন কিন্তু নাই, এটাই শেষ কথা যে আপনি কবে শিফট করছেন। মাস্তান্দের কথা তো শুনলেন, তাঁরা কখন কোন ক্ষতি করে দেয় , তাঁর কোন ঠিক আছে?
মনাঃ আচ্ছা, সামনে সপ্তাহে মেসে উঠা আমার একমাস হবে, মেসের বিলটা দিয়ে না হয়—
মৌঃ ঠিক আছে, কথা দিলেন তো।
মনাঃ আচ্ছা দিলাম।
মৌঃ আমিও কাউকে আজকের কথা জানাবো না, কথা দিলাম।
তাঁরা ইতি মধ্যে মৌদের বাড়ির সামনে চলে এসেছে। তাই মৌ বলল-
মৌঃ চলুন বাসায় বসে চা খেয়ে যাবেন।
মনাঃ আজ আর না। তুমি যাও। কাল দেখা হবে।
মৌ গেটের ভেতর প্রবেশ করলে, মনা মেসের পথ ধরল।
--------------------
চলবে-- আসছে আগামী পর্বঃ ১৫। আশাকরি সাথে থাকবেন।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন