1.কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয়?  সূচনাঃ-      কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয় জানতে হলে আমাদেরকে আগে জানতে হবে কাঁঠাল ও কোকাকোলার মধ্যে কী কী আছে? তাই চলুন নিচের টেবিল থেকে প্রথমে আমরা জেনে নিই, কাঁঠালের মধ্যে কী কী আছে।  প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)- কাঁঠাল এর পুষ্টিমান  শক্তি ৩৯৭ কিজু (৯৫ kcal)                                                       শর্করা চিনি ১৯.০৮ g খাদ্য তন্তু ১.৫ g স্নেহ পদার্থ ০.৬৪ g প্রোটিন ১.৭২ g                                                       ভিটামিন ভিটামিন এ সমতুল্য বিটা-ক্যারোটিন লুটিন জিয়াক্সানথিন ১% - ৫ μg১% ৬১ μg - ১৫৭ μg থায়ামিন (বি ১) ৯%- ০.১০৫ মিগ্রা রিবোফ্লাভিন (বি ২) ৫%- ০.০৫৫ মিগ্রা নায়াসিন (বি ৩) ৬%-০.৯২ মিগ্রা প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫ ) ৫%-০.২৩৫ মিগ্রা ভিটামিন বি ৬ ২৫%-০.৩২৯ মিগ্রা ফোলেট (বি ৯) ৬%-২৪ μg ভিটামিন সি ১৭%-১৩.৮ মিগ্রা ভিটামিন ই ২%-০.৩৪ মিগ্রা                                                           খনিজ ক্যালসিয়াম ২%-২৪ মিগ্রা লৌহ ২%-০.২৩ মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম ৮%-২৯ মিগ্রা ম্যাঙ্গানিজ ২%-০.০৪৩ মিগ্রা ফসফর

ধারাবাহিক উপন্যাসঃ “ডাঙ্গুলী” ----খোশবুর আলী (পর্বঃ “আঠার” )

 

ধারাবাহিক উপন্যাসঃ “ডাঙ্গুলী”

       ----খোশবুর আলী

পর্বঃ  “আঠার” 

তারিখঃ ০৭/০৬/২০২০           

সেদিন ছিল বুধবার ১৯শে অক্টোবর। মনা চাকুরীতে যোগদান করার উদ্দেশ্যে বাবা-মার নিকট হতে বিদায় নিয়ে চলে এল রাজশাহীতে। এর মধ্যে দুইমাস গত হয়েছে মনা ও মৌ এর মধ্যে সরাসরি দেখা নাই। টেলিফোনে কথা হত প্রতিদিন । কিন্তু দেখা না হওয়াতে একে অপরের প্রতি আকর্ষন্টা আরো বেড়ে গেছে। তা ছাড়া উভয়েরই যথেষ্ঠ বয়স হয়েছে।

মৌ যানতো মনা আসবে আজ। তাই বেশ সেজে গুজেই অপেক্ষা করছিল মনার জন্য। দরজা খুলতেই আজ মৌকে দেখে মনা বেশ আশ্চর্য হয়ে গেল। একি সুন্দরী লাগছে আজ মৌকে। জ্যান্ত পরি যেন তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে। মনা মুখটা নিচু করে আস্তে করে মৌ এর কানের কছে মুখটি নিয়ে বলল—

মনাঃ তোমাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে, মনে হচ্ছে আমার স্বপ্নের রাজকন্যা আমার সামনে দাঁড়িয়ে। কেমন ছিলে সোনা?

মৌ আজ মনার এমন আচরনে বেশ আশ্চর্য। কারণ তাঁর সাথে পরিচয়ের পর হতে কোনদিন মনার মুখে কোন প্রসংসা পায়নি। মনা সারাক্ষন তাঁকে শ্বাসনে রাখতো। মৌ এরও ভাল লাগতো তাঁর শ্বাসনে থাকতে। এতে তাদের পড়াশোনা যেমন  ভাল হয়েছে তেমন এক বাড়িতে থাকা সত্তেও চরত্রের কোন প্রকার নৈতিক অবক্ষয় হয়নি। মৌ আস্তে করে বলল--

মৌঃ ভালো, আপনি?

মনাঃ ভাল, তবে এখুন থেকে আর আপনি নয় সোনা, তুমি।

মৌঃ আমার লজ্জা লাগবে।

মনাঃ ঠিক আছে আমি তোমার লজ্জা ভেঙ্গে দিচ্ছি।

 

এমন সময় ভেতর থেকে মা বলে উঠলো—

মাঃ মৌ, কে এল মা?

মনাঃ (আস্তে করে বলল ) বল জামায় এসেছে মা। 

মৌঃ (হাঁসতে হাঁসতে) ভাইয়া এসেছে মা।

মাঃ তা দরজায় দাঁড়িয়ে কেন? ভেতরে নিয়ে আয়।

মৌঃ আসি মা।বলে মনার হাত ধরে ভেতরে নিয়ে গেল।

মনা ভেতরে গিয়ে বসতেই মা এসে বলল—

মাঃ  কেমন ছিলে বাবা?

মনাঃ ভাল আন্টি, আপনারা কেমন ছিলেন?

মাঃ আমরাও আল্লাহর রহমতে ভাল আছি বাবা। তোমার বাবা মা ভালো তো?

মনাঃ হ্যাঁ আন্টি ভাল সবাই। তবে আমি চলে আসায় মা বাড়িতে একা হয়ে গেলেন , মনিও শশুর বাড়ি।  মায়ের জন্য খারাপ লাগছে।

মাঃ হ্যাঁ বাবা। মনির শশুর বাড়ির লোকজন কেমন?

মনাঃ ওরাও বেশ ভাল, আকাশ খুব ভাল ছেলে, এখুন প্রাইভেট প্রাক্টিস করছেকিছুদিনের মধ্যে হয়তো চাকুরী হয়ে যাবে।

মাঃ বিয়ের অনুষ্ঠান কেমন হল বাবা?

মনাঃ খুব জাকজমক ভাবে করা হয়নি, সাধারনভাবেই হয়েছে।

মাঃ ও আচ্ছা। মৌ চল মা, মনাকে নাস্তা দিবি, বলে মৌকে নিয়ে চলে গেল।

মনা যেই ঘরে থাকতো সেই ঘরের দিকে পা বাড়ালো। ঘরে গিয়ে মনা হতবাক হয়ে গেল। সবকিছু সাজানো গোছানো, বিছানা বালিশ চাদর সবকিছু নতুন। খাটের পাশে একটি বড় ফুলদানিতে একগুচ্ছি তাজা গোলাপ আর রজনীগন্ধা। সারা ঘরময় মিষ্টি সুবাসে ভরপুর। ঘরে সিলিঙ্গে ঝুলছে ঝাড়বাতি , রংবেরঙ্গের আলো ছড়াচ্ছে রঙিন বাতিগুলো ঘরময়, জানালা দরজায় নতুন পর্দা ঝোলানো। ঘরটাও রঙ করা হয়েছে, সুন্দর আকাশী রঙ যেটা মনার খুব পছন্দ। ঘরে ঢুকে এক অপরুপ আবহে মনার সারা শরীর শিহরিত হয়ে উঠল তাই চারিদিকে ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকলো। কখন পেছনে মৌ এসে দাঁড়িয়েছে মনা খেয়ালই করে নি। তাই মৌ গলা খেঁকিয়ে বলল—

মৌঃ ওহু-হু-হু। এইযে- বসেন, নাস্তা রেডি।

মনাঃ চমকে উঠে, ওহ হ্যাঁ। আচ্ছা বলতো আজ সব কিছু এত ভাল লাগছে কেন?

মৌঃ আজকে নতুন সুর্য্য উঠেছে তাই।

মনাঃ মানে?

মৌঃ আপনি আজ নতুন ভাবে এখানে আগমন করেছেন। আগে ছিল শুধু পড়া আর পড়া, এখুন নতুন চাকুরী, নতুন জীবন শুরু করার মানশিকতা জাগছে মনে। ঠিক আপনার মত আমিও অনেক কিছু ভাবছিলাম। আমার বাবা-মা হইতো আমাদের মনের ভাষাগুলো জানতে পেরেছে তাই আমাদের বাড়িটাকেও নতুন করে সাজানো হয়েছে, আর আমি নিজ হাতে সাজিয়েছি আপনার এই ঘরটি।

সবকিছু ঠিকঠাক তাই হয়তো শিহরন জাগছে মনে।

মনা মৌএর কথা শুনছিল আর তাঁর মুখের দিকে ওপলক চেয়ে ছিলতাঁর মনে হচ্ছিল আজ মৌকে বুকে টেনে নিয়ে খুব বেশী আদর করতে। এত সুন্দর করে সে তাঁর মনের কথাগুলো বুঝেছিল। এত সুন্দর গুছিয়ে কথা বলছে মৌ আজ। যাকে সে সারাক্ষন স্বাসন করতো তাঁকে আজ আদর করতে ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু মনের মানুষ্টি বলছে, থেমে যা, হয়নি সময় তোর।

মনাঃ ( স্বাভাবিক হয়ে) এত কি এনেছ? জামাই না হতেই জামাই আদর কেন?

মৌঃ হ্যাঁ , আপনাকে জামাই আদর করতে আমার বয়েই গেছে।

মনাঃ আর তো কটা দিন, তাঁর পর দেখব কর কি না?

মৌঃ ভবিষ্যতের কথা ভবিষ্যত বলবে।

মনাঃ চল এক সাথে খাই, তাঁর আগে দাঁড়াও আমি চেঞ্জ করে নি।

অন্যদিন হলে মনা মৌকে তাঁর ঘর হতে বের করে দরজা বন্ধকরে চেঞ্জ করতো। আজ মৌ এর সামনেই চেঞ্জ করতে লাগল। মৌ খাবারটা টেবিলে রেখে সোফায় বসেছিল। এই প্রথম কোন পুরুষ মানুশকে সে সামনে থেকে পোশাক চেঞ্জ করতে দেখল। মনার শরীরের গঠন দেখে সে বিস্মিত হয়ে গেল। এত সুন্দর দেখতে হয় পুরুষ মানুশ। মৌ এর সারা শরীরে এক অন্য রকম শিহরোন খেলা করছিল।

 

দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষে মনা তাঁর রুমে বসে আগামী কাল নতুন চাকুরীরে যোগদান করার ব্যাপারে ভাবছিল। এমন সময় মৌ এলো তাঁর ঘরে। মনা বিছানায় উঠে বসলো। মৌ গিয়ে বসলো বিছানায়। মৌ মনাকে বলল-

মৌঃ ইঞ্জিনিয়ার সাহেব, আগামী কাল থেকে তো ব্যাস্ত হয়ে পড়বেন চাকুরীতে, চলুন আজকে একটু চিড়িয়াখানাথেকে বেড়িয়ে আসি।

মনাঃ আমার মনের কথায় বলেছ। আমিও ভাবছিলাম চিড়িয়াখানা বেড়ানো হবে আমার অফিসটা ও দেখে আসা হবে। কতদিন ঘুরিনি সেসব যায়গায়। কলেজে পড়ার সময় দু’এক বার গেছি, তাই না?

মৌঃ হ্যাঁ।

মনাঃ কিন্তু আন্টি কি রাজি হবেন তোমাকে আমার সাথে যেতে দিতে?

মৌঃ আমার মা-বাবা আপনাকে বিশ্বাস করেন। তাঁরা জানে আপনার দ্বারা  আমার কোন ক্ষতি হবে না, বরং বিপদ আপদ থেকে আপনিই রক্ষা করবেন।

মনাঃ আমি না, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ কাউকে রক্ষা কতে পারে না। আর আমার দ্বারা তোমার কোন ক্ষতি হবে না, কারন আমি সেই আল্লাহকে ভয় করি যে আল্লাহ আমাকে অস্তিহীন থেকে অস্তিত্ব দান করেছেন।

মৌঃ আজ আপনার মনে দেখছি অন্য সুর।

মনাঃ কেমন?

মৌঃ হঠাত করে মনে হচ্ছে খুব ইসলামিক মন মানসিকতা তৈরি হয়েছে।

মনাঃ আমাদের বয়স কত হলো, বলতো?

মৌঃ পঁচিশ/ছাব্বিশ।

মনাঃ নামাজ ফরজ কত বছর বয়সে?

মৌঃ সাত থেকে দশ।

তাহলে বল আমরা কতটা অন্যায় করেছি। আতিত হয়ে যাওয়া সেই দিনগুলির হিসাব আল্লাহ চাইলে কি জবাব দেব বলতো? মনার চোখ দুটো ছলছল করে উঠে।

মৌঃ ঠিক বলেছেন। আসোলে আজ থেকেই আমাদের বিগত দিনগুলির জন্য ক্ষমা চেয়ে নামাজ পড়া উচিৎ।

মনাঃ ঠিক বলেছ। চল আজ থেকেই আমরা দুজনেই নামাজ পড়া শুরু করি। তাহলে হইতো আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করতেও পারেন।

মনের অজান্তেই মৌ তাঁর ওড়নাটা টেনে কখন মাথায় দিয়েছে, খেয়ালই করে নি। তা দেখে মনা বলল-

মনাঃ আজ ওড়নাটা মাথায় দিয়ে তোমাকে আরও সুন্দর লাগছে।

মৌ লজ্জা পেয়ে মুখটা নিচু করে। বলল—

মৌঃ বিয়ের আগে কোন যুবতী নারীর দিকে দেখতে নেই, জানেন না?

মনাঃ তুমি আবার অন্য কেউ নাকি?

মৌঃ বারে, নইতো কি?

মনাঃ ওহ, বুঝতে পেরেছি, তোমার আর ত্বর সইছে না। ঠিক আছেচাকুরী করি প্রথম মাসের বেতনটা হাতে পাই, উপার্জন করতে শিখি, ইনশাআল্লাহ তাঁর পরই তোমার ব্যাবস্থা করছি।

মৌঃ তাহলে আজকের পরিকল্পনা কি থাকলো, নাকি বাতিল।

মনাঃ কোনটা?

মৌঃ পার্কে যাওয়া।

মনাঃ কি করলে ভাল হয়, আমরা যখন আসর থেকে নামাজ পড়বো বলে সিদ্ধান্ত নিলাম তখন দু’জনে এক সাথে না যাওয়ায় বুঝি ভাল, তুমি কি বল? বিয়ের পর না হয়----

মৌঃ আপনি যেটা ভালো মনে করেন।

মনাঃ তাহলে বরং আমি বিকালে গিয়ে অফিসটা দেখে আসি।

মৌঃ ঠিক আছে, সেটায় ভাল হবে। আমারও বাইরে যেতে খুব একটা ইচ্ছা করছে না।

মনাঃ তুমি আমার সিদ্ধান্তগুলি নির্দিধায় মেনে নাও আর তাতেই আমার মনে হয় সত্যি তুমি আমার উপযুক্ত মেয়ে, তুমি সব সময় আমার মনের ভাষাগুলি পড়তে পার। তোমাকে পেয়ে সত্যি আমি খুশি। আল্লাহ যেন তোমাকে আমার করে দেন খুব তাড়াতাড়ি।

মনার প্রসংসা শুনে মিনার চোখ বেয়ে দুই ফোটা অশ্রু গড়িয়ে এলো। ওড়না দিয়ে চোখ মুছে মৌ বলল-

মৌঃ অনেক হয়েছে । আপনি বিশ্রাম নিন। আমি ঘরে গেলাম।বলে নিজ ঘরের দিকে চলে গেল আর মনা অপলক নেত্রে চেয়ে রইলো তাঁর পদ পানে।

--------------------------

------চলবে----- আসছে আগামী পর্বঃ ১৯ । সাথে থাকবেন আশাকরি।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বিধাতা রাখিও তাঁরে সুখে।