1.কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয়?  সূচনাঃ-      কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয় জানতে হলে আমাদেরকে আগে জানতে হবে কাঁঠাল ও কোকাকোলার মধ্যে কী কী আছে? তাই চলুন নিচের টেবিল থেকে প্রথমে আমরা জেনে নিই, কাঁঠালের মধ্যে কী কী আছে।  প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)- কাঁঠাল এর পুষ্টিমান  শক্তি ৩৯৭ কিজু (৯৫ kcal)                                                       শর্করা চিনি ১৯.০৮ g খাদ্য তন্তু ১.৫ g স্নেহ পদার্থ ০.৬৪ g প্রোটিন ১.৭২ g                                                       ভিটামিন ভিটামিন এ সমতুল্য বিটা-ক্যারোটিন লুটিন জিয়াক্সানথিন ১% - ৫ μg১% ৬১ μg - ১৫৭ μg থায়ামিন (বি ১) ৯%- ০.১০৫ মিগ্রা রিবোফ্লাভিন (বি ২) ৫%- ০.০৫৫ মিগ্রা নায়াসিন (বি ৩) ৬%-০.৯২ মিগ্রা প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫ ) ৫%-০.২৩৫ মিগ্রা ভিটামিন বি ৬ ২৫%-০.৩২৯ মিগ্রা ফোলেট (বি ৯) ৬%-২৪ μg ভিটামিন সি ১৭%-১৩.৮ মিগ্রা ভিটামিন ই ২%-০.৩৪ মিগ্রা                                                           খনিজ ক্যালসিয়াম ২%-২৪ মিগ্রা লৌহ ২%-০.২৩ মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম ৮%-২৯ মিগ্রা ম্যাঙ্গানিজ ২%-০.০৪৩ মিগ্রা ফসফর

ধারাবাহিক উপন্যাসঃ ডাঙ্গুলী--- খোশবুর আলী, পর্বঃ ০৮

ধারাবাহিক উপন্যাসঃ - ডাঙ্গুলী

পর্বঃ – “আট   

-----খোশবুর আলী

তারিখঃ ১৫/০৬/২০২০     

সোহেল চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রায় সপ্তাহ খানেক  মেডিকেলে যাতায়াত করে মনাকে সুস্থ করে তুললো।সবাই তাদের কে বলতে লাগল-  পরের ছেলের প্রতি এত মায়া কেন? ওর বাবা মা খোঁজ পেলে হইতো নিয়ে যাবে, খামাখা মায়া বাড়িয়ে লাভ কি? কিন্তু সোহেল চৌধুরী সেদিকে কর্নপাত করল না।  সোহেল চৌধুরী তাঁর বন্ধু মারুফের সাথে যোগাযোগ রাখতেন, যদি মনার বাবাকে খুঁজে পাওয়া যায়। মনা সুস্থ হলে মেডিকেলের নিয়ম অনুযায়ী অভিভাবকের স্বাক্ষরে রোগীকে ছাড় দেওয়া হয়। সোহেল চৌধুরী অভিভাবকের স্থানে স্বাক্ষর করে ছাড় পত্র নিলেন এবং মারুফের কথা মত মনাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে এলেন।

 

সোহেল চৌধুরীর কোন সন্তান না থাকায় মনা তাঁর কাছে থাকলে তাঁর খুব ভাল লাগত। অন্যদিকে তাঁর স্ত্রী মনার বেশ যত্ন করতে লাগলেন। ফলে মনা খুব অল্প দিনের মধ্যে তাদের সন্তানের মত হয়ে উঠলমনাও সোহেল চৌধুরীর স্ত্রীকে মা  ডাকতে লাগল, ফলে মনার প্রতি তাঁর মায়া আরো বেড়ে গেল। সোহেল চৌধুরীর স্ত্রী মিনা তাঁর স্বামী কে বললেন-

মিনাঃ মনা খুব ভাল ছেলে, কোন দুষ্টামি করে না, আল্লাহ আমার উদরে সন্তান  দেইনি বলে হইতো মনাকে আমার কোলে তুলে দিয়াছেন। আমি মনাকে আমার সন্তান হিসাবেই মানুষ করতে চাইতুমি মনার জন্য কিছু বই কিনে দাও, আমি বাড়িতে পড়াব। যদি ভাল পড়াশোনা করতে পারে তাহলে স্কুলে ভর্তি করে দেব। যদিও বয়েস একটু বেশী তবুও তুমি বললে হইতো স্কুলে ভর্তি নিবে।

 

সোহেল চৌধুরীঃ খুব ভাল বলেছ। আমি আজই মনার জন্য বই কিনে  আনব।

কথা মত সোহেল চৌধুরী শিশুদের উপযোগী কিছু বই কিনে আনলেন। বই পেয়ে মনা খুব খুশি। বই এর সাদাকালো ছবি গুলি মনা উল্টিয়ে উল্টিয়ে দেখতে লাগল।

মনা কখনো বই পড়েনি, কিন্তু তাঁর গ্রামের কয়েকজন ছেলেমেয়েকে স্কুলে যেতে দেখেছে, কিবাবে বই ধরে স্কুলে যায়। মনা বইগুলিকে গুছিয়ে সেভাবে ধরে হেঁটে মিনাকে দেখালো , এভাবে স্কুলে যেতে হয়। দেখে মিনা খুব খুশি হল।

সেদিন থেকে শুরু হল মনার পড়াশোনা। মিনা শিক্ষিত মহিলা ছিলেন। এস এস সি পাশ। ফলে মনাকে পড়াতে তাঁর কোন অসুবিধা হতো না। পক্ষান্তরে মনাও খুব  ভাল ভাবে শিখছিল। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে মনা সকল বর্ণ গুলি চিনে ফেলল। এমনকি ছোট ছোট বানান করতে শিখল 

তাই সে তাঁর নিজ নাম, মনা, মায়ের নাম মিনা, বাবার নাম সোহেল ইত্যাদি বানান করতে ও লিখতে লাগল। মনার স্মৃতি শক্তি দেখে মিনা ও সোহেল চৌধুরী অবাক হয়ে গেল। 

সোহেল চৌধুরী মনাকে তাঁর বাড়ির পার্শে নাটোর সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে  দ্বিতীয় শ্রেনীতে ভর্তি করে দিলেন। আড়তে যাবার সময় সোহেল চৌধুরী মনাকে স্কুলে পৌঁছে দিত আর দুপুরে বাড়ি আসার সময় মনাকে স্কুল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসতো।

অতিতের দুঃসহ দিন গুলি মনার মানষ্পট হতে ধীরে ধীরে মুছে যেতে লাগল।

 

বর্তমানে সে এক ধনীর আদরের দুলাল হিসাবে তাঁর জীবন কাটতে লাগল।

দ্বিতীয় শ্রেনীর বার্ষিক পরীক্ষায় মনা চতুর্থ স্থান অর্জন করল। পরের বছর তৃতীয় শ্রেনীতে দ্বিতীয় স্থান আর চতুর্থ শ্রেনীতে প্রথম স্থান অর্জন করতে সামর্থ্য হল।

ততদিনে মিনা ও সোহেল চৌধুরীর বিবাহের প্রায় বার বছর কেটে গেছে।

মিনা লক্ষ্য করল তাঁর মাসিক প্রায় দুই মাস বন্ধ আছে। ভাবল আগেও এমন হত, আবার নিজ থেকেই চালু হয়ে যেত। কিন্তু এবার তা হল না। ফলে সে তাঁর স্বামীকে খুলে বলল।

সোহেল চৌধুরীঃ ঠিক আছে আর কিছু দিন দেখ, সামনে সপ্তাহে না হয় ডাক্তারের নিকট যাওয়া যাবে।

মিনাঃ ঠিক আছে, কিন্তু আমার কেমন কেমন লাগছে। বমি বমি ভাব, মাথা ঝিমঝিম করছে, মাথা ঘুরছে, আগে কখনো এমন হইনি।

সোহেল চৌধুরীঃ তাহলে দেরি করা ঠিক হবে না। চল আজ সন্ধ্যায় আমি আড়ত থেকে ফিরে তোমাকে ডাক্তারের নিকট নিয়ে যাব।

মিনাঃ আচ্ছা।

মিনা স্বামী আর মনাকে খাইয়ে দাইয়ে পাঠিয়ে দিয়ে নিজের সাংসারিক কাজ কর্ম শেষে শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগল, আল্লাহ বোধহয় মনাকে ভালবাসার ফল আমার পেটে দিয়েছেন। হে আল্লাহ তাই যেন হয়। আমি একটি ছেলে পায়েছি আল্লাহ তুমি যদি আমার পেটে কোন সন্তান দিয়ে থাকো তাহলে তা যেন মেয়ে সন্তান হয়। কারন মনাকে আমি আমার ছেলে হিসাবে পেয়েছি, ছেলে হিসাবেই তাঁকে মানুষ করতে চাই। এখুন একটি মেয়ে হলেই আমার জীবন ধন্য হবে ইনশাআল্লাহ।

সেদিন একটু তাড়াতাড়ি সোহেল চৌধুরী বাড়িতে ফিরে এলেন। সন্ধ্যায় একটি রিক্সায় করে তাঁরা তিনজন মিলে গাইনি বিভাগের এক ডাক্তারের নিকট গেলেনডাক্তার সবকিছু পরিক্ষা করে বললেন মিনার সন্তান হবে। এখন থেকে মিনাকে খুব সাবধানে থাকতে হবে। আর মাঝে মাঝে আমার কাছে নিয়ে আসবেন পরিক্ষা করার জন্য। যেহেতু প্রায় বার বছর পর সন্তান সুতরাং পাঁচমাস খুব বিপদ জনক সময়

তাঁরা খুব খুশি হয়ে বাড়ি ফিরে আসলো। মনা বুঝতে পারলো না তাঁর মায়ের কি হয়েছে? কেন ডাক্তারের কাছে গেল?

তাই মাকে জিজ্ঞেস করল-

মনাঃ মা তোমার কি হয়েছে?

মিনাঃ কিছু না বাবা।

মনাঃ তাহলে ডাক্তারের কাছে গেলে কেন?

মিনাঃ আমার পেটে আরেকটি বাবু আছে তো তাই।

মনাঃ ও তাই নাকি? আমার ভাই হবে?

মিনাঃ না। বল বোন হবে।

মনাঃ ও আচ্ছা, বোন হবে কি মজা, কি মজা।

মনার খুশি দেখে মিনাও খুব খুশি হয়।

এভাবে খুশিতে তাদের দিন কাটতে লাগল।

(আগামী পর্বঃ ৯ আসছে, সাথে থাকবেন আশাকরি।)   

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বিধাতা রাখিও তাঁরে সুখে।