1.কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয়?  সূচনাঃ-      কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয় জানতে হলে আমাদেরকে আগে জানতে হবে কাঁঠাল ও কোকাকোলার মধ্যে কী কী আছে? তাই চলুন নিচের টেবিল থেকে প্রথমে আমরা জেনে নিই, কাঁঠালের মধ্যে কী কী আছে।  প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)- কাঁঠাল এর পুষ্টিমান  শক্তি ৩৯৭ কিজু (৯৫ kcal)                                                       শর্করা চিনি ১৯.০৮ g খাদ্য তন্তু ১.৫ g স্নেহ পদার্থ ০.৬৪ g প্রোটিন ১.৭২ g                                                       ভিটামিন ভিটামিন এ সমতুল্য বিটা-ক্যারোটিন লুটিন জিয়াক্সানথিন ১% - ৫ μg১% ৬১ μg - ১৫৭ μg থায়ামিন (বি ১) ৯%- ০.১০৫ মিগ্রা রিবোফ্লাভিন (বি ২) ৫%- ০.০৫৫ মিগ্রা নায়াসিন (বি ৩) ৬%-০.৯২ মিগ্রা প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫ ) ৫%-০.২৩৫ মিগ্রা ভিটামিন বি ৬ ২৫%-০.৩২৯ মিগ্রা ফোলেট (বি ৯) ৬%-২৪ μg ভিটামিন সি ১৭%-১৩.৮ মিগ্রা ভিটামিন ই ২%-০.৩৪ মিগ্রা                                                           খনিজ ক্যালসিয়াম ২%-২৪ মিগ্রা লৌহ ২%-০.২৩ মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম ৮%-২৯ মিগ্রা ম্যাঙ্গানিজ ২%-০.০৪৩ মিগ্রা ফসফর

উপন্যাসঃ “ডাঙ্গুলী” ----খোশবুর আলী (পর্বঃ “সতের” )

উপন্যাসঃ “ডাঙ্গুলী”

----খোশবুর আলী

তারিখঃ        

  পর্বঃ “সতের”

মৌ তাঁর ঘরেই পড়ছিল। মা রান্নাঘরে কাজে ব্যাস্ত। বাবাও আড়োতে। হঠাত টেলিফোন বেজে উঠল। তাই মা রান্নাঘর থেকে হাঁক দিয়ে মৌকে বলল-

মাঃ মৌ, দেখ তো মা, তোমার বাবা ফোন দিল নাকি?

মৌ ছুটে গেল সাহেব ঘরে টেলিফোন ধরতে। রিসিভার তুলেই বলল-

মৌঃ হ্যাঁলো বাবা!

মনাঃ হ্যালো , আমি মনা বলছি।

মৌ এর বুকটা ধপ অরে উঠল। গত আটদিন মনার সাথে তাঁর দেখা নাই। হ্যাঁ এটা তো মানারই কন্ঠ। তাই থতমত খেয়ে মৌ বলল—

মৌঃ ও আপনি? তা কি মনে করে এতোদিন পর।

মনাঃ এতদিন মানে?

মৌঃ মানে গত আটদিন কোথায় লুকিয়ে ছিলেন?

মনাঃ ও তাই? আগে বল বাড়ির সবাই কেমন আছে?

মৌঃ সবাই ভাল আছে, শুধু আমি খারাপ ছিলাম, তবে এখুন ভাল লাগছে।

মনাঃ হ্যাঁ, আমি বুঝতে পেরেছি। তবে ফোনে আর কথা বাড়াবো না, আগামী কাল কথা হবে।

মৌঃ আপনি আমাকে কলেজে যাবার জন্য নিতে আসবেন।

মনাঃ ওকে, বাই। বলে ফোন রেখে দিল।

 

    এদিকে মনার মনের মধ্যে তাঁর স্বজন হারানোর ভয় কাজ করছিল, আর মৌ এর মনের মধ্যে মনাকে হারানোর ভয় কাজ কররছিল, ফলে সারারাত দুজনের কেউই ভাল ঘুমাতে পারলো না   

 

সকাল সকাল মনা নাস্তা সেরে পায়ে হেঁটেই চলে গেল মৌদের বাসায়।

 

কলিংবেল বাজাতেই মৌ ছুটে এসে দরজা খুলে মনাকে দেখে খুব খুশি হল। কিন্তু গত সাত দিন সে যা দেখেছে বা যেসব ঘটনা ঘটেছে তাঁর সব গুলি মনাকে বলার জন্য তাঁর মন ছটফট করছিল। তাই মনাকে বলল আসেন ভেতরে বসেন, আমি রেডি হয়ে আসি।

 মনা সোফায় গিয়ে বসলো কিচ্ছুক্ষন পর মৌ এর মা ঘরে এসে মনাকে দেখে   বলল- ওহ মনা যে, ক্যামন আছ বাবা? তুমি বসো, আমি নাস্তা নিয়ে আসি

মনাঃ আমি ভাল আছি । না আন্টি, নাস্তা দিতে হবে না, আমি খেয়ে এসেছি, মৌকে নিতে এলাম কলেজে যাবার জন্য।

চাচীঃ একটু কিছু খাও?

মনাঃ না আন্টি কিচ্ছু খাব না। থাক।

চাচীঃ তা বাবা কবে শিফট করছ আমাদের এখানে? মৌ বলছিল কয়েকদিন পরেই করবে। তুমি এখানে থাকলে আমাদেরও ভাল লাগতো।।

মনাঃ হ্যাঁ চাচী, দেখি আগামী ১ তারিখে হইতো শিফট করতে পারি।

চাচীঃ ও আচ্ছা।

এর মধ্যে মৌ এল, বলল—

মৌঃ চলুন।

মনাঃ আসি চাচী, বলে উঠে দাঁড়ালো এবং মৌ আর মনা বেরিয়ে পড়লে মৌ এর মা দরজা বন্ধ করে ভেতরে নিজ কাজে চলে গেল।

রাস্তায় গিয়ে তাঁরা একটি রিক্সা নিয়ে কলেজ অভিমুখে রওয়ানা হল।

যেতে যেতে মৌ-প্রথমে বলল-

মৌঃ আচ্ছা আপনি আসোলে কে বলুন তো?

মনাঃ আমি কে মানে?

মৌঃ মানে আপনি কি কি করতে পারেন?

মনাঃ এই সামান্য পড়াশোনা, সকাল বিকাল একটু ব্যায়াম, খাওয়া দাওয়া,  ঘুমানো, কলেজ করা, এই আর কি।

মৌঃ রিক্সা ভ্যান চালাতে পারেন না?

মনাঃ কোনদিন চালাই নি, তবে চালাতে পারব মনে হয়।

মৌঃ বিগত আট দিন কলেজে আসেন নি কেন?

মনাঃ ওহ, হা সেটাই তো তোমাকে বলা হয় নি। আসলে বাড়ীর জন্য আমার মনটা  কেমন ছটফট করছিল। কখনো মা-বাবাকে ছাড়া থাকিনি, আর বৃহঃবার হাফডে,  শুক্রবার ছুটি, তাই হুট করে বাড়ি চলে গেলাম। আমার বোনটি আমাকে  পেয়ে আর  আসতে দেবে না। তাই একদিন দুইদিন করে আটদিন দেরি হয়ে গেল।

তা তুমি কেমন ছিলে?

মৌঃ আমার খুব খারাপ কাটল এই আট দিন।

মনাঃ কেন?

মৌঃ আপনি ছিলেন না অথচ আপনার মতই অন্য একজন রিক্সা ওয়ালা আমাকে ঐ মাস্তান ছেলে গুলির হাত থেকে বাঁচিয়েছে।

মনাঃ খুলে বলতো বিষয় টা।

মৌঃ সমস্ত ঘটনাটি মনাকে খুলে বলল,  

মনাঃ ওর বাড়ি কোথায় জিজ্ঞেস করনি?

মৌঃ হ্যাঁ, বলেছিল তানোর থানা। আমি তো ভেবেই পাচ্ছিলাম না, এটা আপনি কি না। শুধু আমি সেটা ভাবলে না হয় হত, ঐ মাস্তান ছেলে গুলিও, সেই যে    পালিয়েছে, গত আটদিন আমার ধারে কাছেও ঘেঁসেনি।

মনাঃ আচ্ছা ও যখন রিক্সা চালায় , তখন আবার দেখা হবে হয়তো।

মৌঃ কিন্তু দেখেন, যেই আপনি আসলেন অমনি সে উধাও।তাহলে কি আপনার অনুপস্থিতিতে আল্লাহ ফেরেস্তা পাঠিয়ে আমাকে রক্ষা করল।

মনাঃ তা জানিনা, তবে বিষয়টি নিয়ে আমাকে ভাবতে হবে।

মৌঃ ভাবুন আর যায় করুন। আমাদের ওখানে আপনাকে আজই শিফট করতে হবে।

মনাঃ আজ না, কাল ১ তারিখ।

 

মনার কথা মত পরেরদিন মনা মৌদের বাড়িতে শিফট করল, তাঁরা দুজনে নিয়মিত কলেজ করা প্রায়ভেটে যাওয়া চলতে থাকলো। এভাবে দুই বছর গত হয়ে গেল।

ইন্টারমেডিয়েট পরিক্ষায় দুজনেই ফাষ্ট ডিভিশানে পাশ করলো। মনা এবার রাজশাহী ইঞ্জিরিয়ারিং কলেজে  এডমিশান টেষ্ট দিল আর আর মৌ দিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে

মনা আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হল, তাঁর আগের পরি কল্পনা অনুযায়ী আর মৌ বাংলা বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হল। 

তাঁরা দুজনেই একই সাথে যাতায়াত করে। মনা মৌদের বাটিতে থাকার দরুন মৌ এর সাথে তাঁর রীতিমত ভাব ভালোবাসা সবই হয়েছে। বষয়টি মনার বাবা-মা ও মৌ এর বাবা-মা উভই জানে। তারাও খুশি মনে মেনে নিয়েছে। শুধু পড়াশোনা শেষ হলেই চার হাতকে এক করে দেওয়ার অপেক্ষা।

দেখতে দেখতে পাঁচ বছর কেটে গেল, মনা ও মৌ দুজনেই সুনামের সহিত  পাশ করল।

এবার, সোহেল চৌধুরী , খোকন মিঞাকে জানালো বন্ধু এবার আমাদের আত্মীয়তা আরও গাঢ় করে ফেলি।

খোকন মিঞাও রাজি হল, কিন্তু মনা চাকুরী বাকরি কিছু একটা না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করতে রাজি হল না। ফলে কিছুদিনের জন্য মনা নাটোর তাঁর বাড়িতে  চলে গেল।

অনেকদিন ধরে মৌ ও মনা এক সঙ্গে থাকায় হঠাত করে আলাদা হওয়াতে কাউকেই ভাল লাগছিল না। প্রতি রাতেই ঘন্টার পর ঘন্টা কথা হত টেলিফোনে।

ইতি মধ্যে মনা কয়েকটি সরকারী দপ্তরে আবেদন করেছে।

মনা তাঁর বাবাকে মনির বিয়েটা সেরে ফেলার জন্য বলল। মনি তখন নাটোর কলেজে অনার্স এর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পড়ুয়া মনার স্কুল  জীবনের এক জুনিয়ার বন্ধু আকাশের সাথে তাঁর প্রেম হয়েছেসেটা মনাও জানে,  তাই বাবাকে  বলল-

মনাঃ বাবা, মনি আকাশকে পছন্দ করে। ও খুব ভাল ছেলে , রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়ছে। আগে ওদের বিয়েটা সেরে ফেললে কেমন হয়।

সোহেল চৌধুরীঃ কিন্তু ওদের পড়াশোনা তো শেষ হইনি।  

মনাঃ তাতে কি বাবা, বিয়ের পর না হয় শেষ করবে।

সোহেল চৌধুরীঃ তা হবে হয়তো। কিন্তু আকাশের বাবা মা রাজি হলে তো?

মনাঃ সেটা আমি দেখছি বাবা।

সোহেল চৌধুরীঃ ঠিক আছে দেখ, যদি হয় সেটায় না হয় করা যাবে।

মনাঃ ঠিক আছে বাবা, আমি দেখছি।

সোহেল চৌধুরী তাঁর কাজে চলে গেলে, মনা, মনিকে ডাকলো

মনাঃ মনি আমার ঘরে একটু আয় তো? একটু পরে---   

মনিঃ হ্যাঁ ভাইয়া, বল।

মনাঃ আকাশের খবর কি বলতো?

মনিঃ কি খবর ভাইয়া?

মনাঃ আমি চাইচি তোদের বিয়েটা আগে দিতে। আকাশ রাজি হবে কি না তাই বল।

মনিঃ তুমি না হয় কথা বলে দেখ।

মনাঃ ঠিক বলেছিস। চল ফোন করে দেখি। মনা আকাশের হোস্টেলের নাম্বারে ফোন দিল।

আকাশ হোস্টেলে ছিল, হোস্টেল বয় আকাশকে জানালো আপনার ফোন এসেছে। আকাশ ফোন ধরতেই মনা বলল-

মনাঃ আকাশ কেমন আছ? আমি মনা বলছি।  

আকাশঃ হ্যাঁ ভাইয়া আমি ভাল আছি। তা কি মনে করে?

মনাঃ তোমাদের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতাম। তোমার ফাইনাল এক্সাম কবে?

আকাশঃ এই তো ভাইয়া, সামনের মাসে।  

মনাঃ ও, তাহলে তো সমস্যা নাই, তোমার পরিক্ষা শেষ হোক আর আমরাও প্রস্তুত হয়ে নি, না কি বল?

আকাশঃ হ্যাঁ, ভাইয়া ঠিক বলেছেন।

মনাঃ তাহলে তোমার বাবা মায়ের সাথে কথা বলে নি, তাদের মতামতটা জেনে নি।

আকাশঃ হ্যাঁ ভাইয়া , সেটাই ভাল হবে।

মনাঃ ওকে, ভাল থেকো, বাই।

মনির বিয়ের দিন হঠাত করে একটি চিঠি এল মনার কাছে, তাঁর চাকুরী হয়েছে রাজশাহী বরেন্দ্র অফিসের ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে। আগামী মাসের বিশ তারিখে  জয়েন্ট করতে হবে। দেখে মনার বাবা-মা সহ সবাই খুব খুশি হল।

------------------------

--------চলবে---- আসছে আগামী পর্বঃ ১৮সাথে থাকবেন আশাকরি।     

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বিধাতা রাখিও তাঁরে সুখে।