1.কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয়?  সূচনাঃ-      কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয় জানতে হলে আমাদেরকে আগে জানতে হবে কাঁঠাল ও কোকাকোলার মধ্যে কী কী আছে? তাই চলুন নিচের টেবিল থেকে প্রথমে আমরা জেনে নিই, কাঁঠালের মধ্যে কী কী আছে।  প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)- কাঁঠাল এর পুষ্টিমান  শক্তি ৩৯৭ কিজু (৯৫ kcal)                                                       শর্করা চিনি ১৯.০৮ g খাদ্য তন্তু ১.৫ g স্নেহ পদার্থ ০.৬৪ g প্রোটিন ১.৭২ g                                                       ভিটামিন ভিটামিন এ সমতুল্য বিটা-ক্যারোটিন লুটিন জিয়াক্সানথিন ১% - ৫ μg১% ৬১ μg - ১৫৭ μg থায়ামিন (বি ১) ৯%- ০.১০৫ মিগ্রা রিবোফ্লাভিন (বি ২) ৫%- ০.০৫৫ মিগ্রা নায়াসিন (বি ৩) ৬%-০.৯২ মিগ্রা প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫ ) ৫%-০.২৩৫ মিগ্রা ভিটামিন বি ৬ ২৫%-০.৩২৯ মিগ্রা ফোলেট (বি ৯) ৬%-২৪ μg ভিটামিন সি ১৭%-১৩.৮ মিগ্রা ভিটামিন ই ২%-০.৩৪ মিগ্রা                                                           খনিজ ক্যালসিয়াম ২%-২৪ মিগ্রা লৌহ ২%-০.২৩ মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম ৮%-২৯ মিগ্রা ম্যাঙ্গানিজ ২%-০.০৪৩ মিগ্রা ফসফর

ধারাবাহিক উপন্যাসঃ ছেঁড়া চিরকুট ---খোশবুর আলী- পর্বঃ ০১

ধারাবাহিক উপন্যাস

ছেঁড়া চিরকুট”

-------খোশবুর আলী

প্রথম পর্ব

ঢং ঢং ঢং ঢং-----! কাঁটায় কাঁটায় বিকেল চারটায় স্কুল ছুটির বেল বাজল। ক্লাস থেকে শিক্ষকেরা কিছুক্ষন আগেই বেরিয়ে গিয়েছিলেন।ফলে ছাত্র ছাত্রীরা ক্লাসের মধ্যে হৈ হুল্লোড় করছিল। বেলের শব্দ শোনার সাথে সাথে হুড়মুড় করে বেরোবার জন্য প্রতিযোগীতা শুরু হল। ফলে কারো বই  পড়ে, তো কারো কলমকোন রকমে কুড়িয়ে নিয়ে দে দৌড়। ক্লাসে মোটামুটি শান্ত ছেলে বলতে   সেই রুহুল। কারো সাথে তেমন ঝগড়া ঝামেলা করে না। লেখা পড়াতেও তেমন ভাল না। সব ছাত্র  ছাত্রী বেরিয়ে যাবার পর রুহুল বের হয়। আজও তাই হল। সে মাথা নিচু করে সবে মাত্র দরজার বাইরে পা ফেলেছে অমনি সে কিছু একটা পড়ে থাকতে দেখল। হাত বাড়িয়ে তুলে নিল ছোট একটি চিরকুট। অনেক গুলো ভাঁজ করা। বাঁকি ছেলেরা ইতিমধ্যে অনেক দূরে চলে গেছে। রুহুল চিরকুট টির দিকে মনোযোগ দিল। খুব আলতো করে ভাঁজগুলো খুলতে লাগল। অনেক যায়গা ছেড়া। কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে সে পড়ার চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু একি তাতে যা লেখা আছে তা পড়ে প্রায় অজ্ঞান হওয়ার অবস্থা। লেখা আছে—

 

রুহুল,

আমি তোমাকে ভালোবাসি, তোমার জন্য আমি জীবন দিতে পারি।

তুমি কেনো আমার মনের কথা বুঝতে পারো না।

ইতি-

চা-----মে-----লী 

 

সমস্ত দুনিয়ার ভার যেন পড়লো তার মাথায়। এই ভাবনা, সেই ভাবনা, ভাবনার কোন   শেষ নেই। আমার ক্লাসে তো চামেলী নামে কোন মেয়ে নেই। হ্যাঁ ক্লাস সেভেনে একটি মেয়ে আছে চামেলী নামে কিন্তু সে তো আমার বয়সে বড়। তাহলে সে কি আমাকে ভালবাসে। না! কোন দিন  সামনা সামনি কথাও বলিনি, সে ক্লাস সেভেনে পড়ে।আমি পড়ি সিক্সে।স্কুলের আর অন্য কোন ক্লাসে চামেলী নামে কোন মেয়ে আছে কি না তাও সঠিক জানিনা। বড় আপুদের নাম জানতে চাওয়াও কেমন বেয়াদবি মনে হয়। তাই বড় আপুদের সবার নামও জানিনা। তাছাড়া রুহুল নামে আর কোন ছাত্রের নাম আছে বলে মনে হয়না। আর ক্লাস সিক্সে তো নেই। আর চিরকুট টা আমাদের  ক্লাসে থাকার মানেই হল – আমাকে উদ্দেশ্য করে লেখা। বার বার পড়তে থাকল। লেখাটির রুহুল নামের র-এর পরে ছেড়াফলে র এক অংশে আর হুল এক অংশে। দুই অংশ জোড়া দিয়ে সে তারই নাম দেখতে পাচ্ছে। চিরকুটটি আর বেশিক্ষণ হাতে রাখা ঠিক হবে না। কেউ দেখলে প্রশ্ন করতে পারে। তাই সে চিরকুটটিকে যত্ন করে ব্যাগের পকেটে রাখল।

আহা! চিরকুটটা আমি না পেয়ে যদি ক্লাসের জনি পেত, তাহলে এতোক্ষণ হুলুস্থুল কান্ড বাধিয়ে দিত। সে ক্লাসের মধ্যে সবচাইতে দুষ্টু ছেলেযাক, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করে্ন  

আজ সন্ধ্যায় মিটিমিটি জ্বলা হারিকেনের আলোতে পড়তে বসে তাঁর পড়ায় তেমন মন বসছে না। বার বার সেই চিরকুটটার কথা মনে হচ্ছে। রুহুলের বাড়ির আর কেউ পড়ালেখা জানে না। ফলে চিরকুটটা নিয়ে বাড়িতে কোন ভয় নেয়। তাই সে সেটি বের করে বার বার পড়তে থাকে। এটি পড়তেই যেন তাঁর খুব ভালো লাগছে। বই এর পড়ায় তাঁর কোন আগ্রহ নেই। প্রতিটা অক্ষর দাড়ি কমা মুখস্ত হয়ে গেছে। তবুও বার বার পড়ছে। মনে মনে ভেবে খুব খুশি হচ্ছে যাক কেউ একজন তো তাকে ভালবাসার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু কোন চামেলী? তাকে খুঁজে পাব কিভাবে?

আমাকে আরও সতর্ক হতে হবে। এরকম আরও চিরকুট পড়ে থাকতে পারে। আর যদি তাই হয়, তাহলে অন্য কেউ পেয়ে যেতেও পারে। আগামী কাল খুব সকাল সকাল স্কুলে গিয়ে ক্লাসের চারপাশটা ভালভাবে খুঁজে দেখতে হবে।   

রাতে আর তাঁর পড়ালেখা হল না। বাড়ির আর সকলের সাথে রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লো। কিন্তু কিছুতেই তাঁর ঘুম আসছে না। সে জেগে জেগেই স্বপ্ন দেখতে থাকলো। আহা চামেলী দেখতে কেমন? তাঁর মুখ, নাখ, চোখ, হাত-পাঁ , গায়ের রঙ নিশ্চয় ফর্সা হবে। হায় আল্লাহ সে যেন দেখতে পরির মত হয়। সে পরি দেখেনি কখনো, কিন্তু শুনেছে পরিরা দেখতে নাকি খুব সুন্দরী হয়। তাই সে তাঁর স্বপ্নের চামেলীকে পরির সাথেই তুলনা করতে চাইছে। বারবার সে চিরকুটে  লেখাগুলো পড়তেই থাকল। রাত অনেক গভীর হয়ে গেলে কখন তাঁর চোখে ঘুম এসেছে বুঝতেই পারেনি।  

রুহুল যথারীতি বই পত্র গুছিয়ে স্কুল ব্যাগটি কাঁধে ঝুলিয়ে গ্রামের মেঠো পথ ধরে স্কুলে   যাচ্ছিল। চিরকুটের কথা তাঁর মনে নেই। হঠাত পাশের ঝোপ থেকে মেয়েলি কন্ঠে কে যেন তাকে ডাকল।

কন্ঠঃ রু---হু---ল।

রুহুল থমকে দাঁড়ালো।

কন্ঠঃ এই , রু---হু---ল।

রুহুলঃ কে? কে ওখানে?

কন্ঠঃ আমি চামেলী।

এবার তাঁর সেই চিরকুটটির কথা মনে পড়ল। এবং লজ্জা পেল। আহা! সেই চামেলী হলে তাঁর সাথে আমি কিভাবে কথা বলব। আমি তো কোনদিন কোন মেয়ের সাথে এমন ভালোবাসার কথা বলিনি। কিন্তু কিছু না বললেও তো খারাপ দেখায়। এই চামেলী যদি সেই চামেলী না হয়, তাহলে তো বেশ লজ্জায় পড়ে যাব। তবুও কিছু একটা বলে দেখি- যা আছে কপালে।

রুহুলঃ তা ওখানে কি করছ?

কন্ঠঃ আমি তো ঝোপঝাড়, বন বাদাড় আর গাছ পালাতেই থাকি।

রুহুলঃ মানে? মানুষ কখনও এসব যাগায় থাকে নাকি?

কন্ঠঃ হ্যাঁ, ঠিক বলেছ। কিন্তু আমি তো মানুষ নই।

এবার রুহুল কিছুটা ভয় পেয়েছে। থতমত খেয়ে বলল—

রুহুলঃ তা---হ----লে--- তু---মি---কি?  

কন্ঠঃ আমি পরি , চামেলী পরী তোমার কোন ভয় নেই।  

রুহুলঃ সাহস নিয়ে, বলল- তুমি আমায় ডাকছ কেন?

কণ্ঠঃ আমি তোমাকে ভালোবাসি, তাই।

রুহুলঃ সামনে এসো।

কন্ঠঃ আসব, তবে তুমি যদি বল আমায় ভালবাস, তবেই।

রুহুল ভাবল আমার কল্পনা বুঝি সত্যি হতে চলেছে। এটি সেই চামেলীই হবে, তবুও একবার জিজ্ঞেস করে দেখি।  

রুহুলঃ তুমি কি আমাকে সেই চিরকুটটা দিয়েছ?

কন্ঠঃ হ্যাঁ। কারণ আমি তোমাকে ভালবাসি।

রুহুলঃ আমি তো মানুষ, তুমি পরী। মানুষের সাথে কি পরীর প্রেম, বিয়ে এসব হয়?  

কন্ঠঃ হবে না কেন? অনেক রাজকুমারের সাথে পরী কন্যার বিয়ের গল্প পড়নি?

রুহুলঃ পড়েছি। কিন্তু সেগুলি তো গল্প, সত্যি নয়।

কন্ঠঃ কে বলেছে সত্যি নয়। সত্যি থেকেই তো গল্প হয়।

রুহুলঃ তাহলে আমার কি করা উচিৎ, আমাকে বলে দাও না।

কন্ঠঃ তোমারও আমাকে ভালবাসা উচিৎ। ভালবাসার বদলে ভালবাসা।

রুহুলঃ কিন্তু, তুমি আমাকে দেখা দিচ্ছনা কেন? 

কন্ঠঃ আমি তো আগেই বলেছি। তুমি আমাকে ভালবাস বললেই, তবে আমি তোমাকে দেখা দেব।

রুহুলঃ ও, আচ্ছা। কিন্তু আমার লজ্জা করে।

কন্ঠঃ কিসের লজ্জা। এখানে তো কেউ নেই।

রুহুলঃ তাহলে বলেই ফেলি নাকি?

কন্ঠঃ হ্যাঁ, বল।

রুহুলঃ কি বলব, ভুলে গেছি, তুমি বলে দাও না।

কন্ঠঃ ঠিক আছে, বলো—আমি তোমাকে ভালো বাসি।

রুহুলঃ ঠিক আছে, তুমি যা বললে তাই।

কন্ঠঃ না, এভাবে নয়। বলতে হবে। আমি তোমাকে ভালোবাসি।

রুহুলঃ বলছি তাহলে, আ—মি—তো—মা—কে--ভা—লো—বা—সি ।

কণ্ঠঃ এই তো, গুড বয়।

রুহুলঃ এবার সামনে এসো।

কণ্ঠঃ এই তো এলাম।

আকাশটা মেঘলা ছিল , মৃদু হাওয়া বইছিল। হঠাত যেন ঝোপের মধ্যে হতে সূর্য্য উদিত হল। সেই আলোর ছটা এসে লাগল রুহুলের গায়। চামেলী পরীর রুপের ছটায় পুড়ে মরছিল রুহুলকাছে এসে হাতে হাত ধরে রুহুলকে বলল—

চামেলীঃ চল প্রিয় তোমাকে আমাদের রাজ্য থেকে বেড়িয়ে নিয়ে আসি।

রুহুলঃ কিন্তু আমি তো স্কুলে যাচ্ছি।

চামেলীঃ তাতে কি? এই যাব আর এই আসবো। তার পর তুমি স্কুলে যাবে। আজ তুমি আমাকে খোঁজার জন্যই তো, সকাল সকাল স্কুলে যাচ্ছিলে, তাই না? আমাকে পেয়েছ, তাহলে তাড়া কিসের? 

রুহুলঃ তুমি আমার মনের খবর সব জান কি করে?

চামেলীঃ আমি তো পরী। আমি মানুষের মনের শুধু নয়, ভবিষ্যত ও বলে দিতে পারি।

রুহুলঃ ও আচ্ছা। তোমাদের রাজ্য কত দূর?

চামেলীঃ এই ধর সাত সমুদ্দুর তের নদী পার হতে হবে।

রুহুলঃ সে তো বহু দূর।

চামেলীঃ আমি তো চোখের পলকে সাত সমুদ্দুর তের নদী পাড়ি দিতে পারি।

রুহুলঃ কিন্তু আমি তো পারি না।

চামেলীঃ তাতে কোন সমস্যা নাই। আমি তোমাকে নিয়ে যাব, আবার এখানে রেখে যাব।

রুহুলঃ ঠিক আছে, চল!

চামেলীঃ আমার হাতটি শক্ত করে ধর, আর চোখ দুটো বন্ধ কর। আমি না বলা পর্যন্ত চোখ খুলবে না। তাতে তোমার বিপদ হতে পারে।

রুহুল শক্ত করে চালেলীর হাত ধরে তার চোখ বন্ধ করল। রুহুলের শরীরটায় একটু ঝাঁকি লাগল, তার কাঁধ থেকে খসে পড়ল  স্কুল ব্যাগটি। শিতল বাতাসের একটি ঝাপটা লাগল গায়ে।এক মুহুর্ত পরে চামেলী তাকে চোখ খুলতে বলল। রুহুল আছতে আছতে চোখ খুলল--------।

--চলবে----- আগামী পর্বঃ ০২।         

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বিধাতা রাখিও তাঁরে সুখে।