1.কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয়?  সূচনাঃ-      কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয় জানতে হলে আমাদেরকে আগে জানতে হবে কাঁঠাল ও কোকাকোলার মধ্যে কী কী আছে? তাই চলুন নিচের টেবিল থেকে প্রথমে আমরা জেনে নিই, কাঁঠালের মধ্যে কী কী আছে।  প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)- কাঁঠাল এর পুষ্টিমান  শক্তি ৩৯৭ কিজু (৯৫ kcal)                                                       শর্করা চিনি ১৯.০৮ g খাদ্য তন্তু ১.৫ g স্নেহ পদার্থ ০.৬৪ g প্রোটিন ১.৭২ g                                                       ভিটামিন ভিটামিন এ সমতুল্য বিটা-ক্যারোটিন লুটিন জিয়াক্সানথিন ১% - ৫ μg১% ৬১ μg - ১৫৭ μg থায়ামিন (বি ১) ৯%- ০.১০৫ মিগ্রা রিবোফ্লাভিন (বি ২) ৫%- ০.০৫৫ মিগ্রা নায়াসিন (বি ৩) ৬%-০.৯২ মিগ্রা প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫ ) ৫%-০.২৩৫ মিগ্রা ভিটামিন বি ৬ ২৫%-০.৩২৯ মিগ্রা ফোলেট (বি ৯) ৬%-২৪ μg ভিটামিন সি ১৭%-১৩.৮ মিগ্রা ভিটামিন ই ২%-০.৩৪ মিগ্রা                                                           খনিজ ক্যালসিয়াম ২%-২৪ মিগ্রা লৌহ ২%-০.২৩ মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম ৮%-২৯ মিগ্রা ম্যাঙ্গানিজ ২%-০.০৪৩ মিগ্রা ফসফর

উপন্যাসঃ “ডাঙ্গুলী” ------খোশবুর আলী ( পর্বঃ ১৩)

উপন্যাসঃ “ডাঙ্গুলী”                  

------খোশবুর আলী

তারিখঃ ১২/০৫/২০২০

                  “তের”

মেসে ফিরে মনা জামা কাপড় ছেড়ে, পড়তে বসলো। কিন্তু কিছুতেই তার পড়াতে মন বসছে না। বারবার তার মৌ এর কথা মনে হচ্ছিল। কিন্তু কিভাবে মৌকে এপথ থেকে ফেরানো যায়, কিছু একটা উপায় খুজতে হবে। বন্ধুদের জানানো যাবে না। তাঁরা জানলে আমাকেও প্রেম করতে বলবে, কারণ তাঁরা সবাই এখুন প্রেমে ব্যাস্ত।

মনা আপ্রান চেষ্টা করে যেটুকু পারলো পড়ল, এর পর আলো নভিয়ে শুয়ে পড়লো।

খুব ভাল ঘুম হইনি মনার, তাই সকালে তার ঘুম ভাংতে দেরি হচ্ছিল। ইতি মধ্যে তার কয়েকজন বন্ধু জেগে গেছে।তাদের মধ্যে সানি এসে মনার দরজার কড়া নাড়লো, আর ডাকলো,

সানিঃ এই মনা, মনা, কি ব্যাপার আজ তোর ঘুম ছুটেনি, কোন অসুখ বিসুখ হল , নাকি রাতে শশুর বাড়ির খানা খেয়ে এখুনও সেটা হজম করছিস।

ভেতর থেকে মনা-

মনাঃ ও কে, সানি। দাঁড়া ভাই আসছি।

সানিঃ কি ব্যাপার আজ এত ঘুমাচ্ছিস কেন? কত বাজে দ্যাখতো?  

মনাঃ আরে না, এই তো উঠলাম।

মনা ঘড়ি দেখল, তখন সকাল সাতটা বাজে। তাই সানিকে ডাকার জন্য থ্যাঙ্কস জানয়ে ব্রাসে পেস্ট লাগিয়ে টয়লেটের দিকে চলে গেল।

মনা নিয়মিত কলেজ করতে লাগল, তার বন্ধু সানি তার পিছে লেগে গেল। সে বলল - কিরে ভাই, শশুর বাড়িতে বৌ- এর জন্ম দিনে গেলি কত কি খেলি, আমাদের কে জান্তেই দিলি না।

মনাঃ নারে ভাই, আসোলে খোকন চাচ্চু আমার বাবার বন্ধু, তিনি আগে থেকেই আমাদের বাড়ি যেতেন আমার বাবাও আসতেন। তিনি বড় মুখ করে আমাকে ডেকে পাঠালেন, আমি না গেলে আমার বাবাকে তিনি কি বলবেন বলতে পারিস?

সানিঃ নারে ভাই, তা নয়। তো তোর চাচ্চুর এমন সুন্দরী একটি মেয়ে আছে জানতিস না?

মনাঃ জানতাম। তবে এমন সুন্দরী আর এত বড় তা জানতাম না, চাচ্চু আমাদের বাসায় গিয়ে বলতেন তারও একটি মেয়ে আছে স্কুলে পড়েতাও তিন বছর আগের কথা। আসোলে এই তিন বছরে এত বড় হবে তা ভাবতেও পারিনি।

সানিঃ এখুন তো দেখতে পেলি। তাড়াতাড়ি প্রোপোজ করে ফ্যাল। নইলে পাখি খাঁচা ছেড়ে উড়ে গেলে পরে পস্তাবি।

মনাঃ তোদের মতো আমার অতো সময় নেই ভাই। আমাকে আমার লক্ষে পৌছাতে হবে।

সানিঃ হ্যাঁ, তোর এই একটি মাত্র ডায়ালোগ। আরে আমরাও তো পড়ালেখা করছি নাকি?

মনাঃ আসোলে আমি তোদের মতো খুব একটা মেধাবী নই ভাই, তাই আমাকে বেশী পড়তে হয়।

সানিঃ হল আর ঢপ মারিস না। চল, মেসে ফিরে যায়।

তাঁরা মেসে ফিরে এল। দুপুরের খাওয়া শেষে নিজ নিজ রুমে বিশ্রামে চলে গেল সবাই। মনাও তার বিছানে শুয়ে পড়ল।

বারবার তার সানির কথাগুলো কানে বাজছিল। সময় মত প্রোপজ না করলে পাখি খাচা ছেড়ে উড়ে যাবে।

মৌ খুব সুন্দরী আর মিষ্টি মেয়ে, তাছাড়া আগে থেকেই পরিচিত। এসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়ল।

যখন তাঁর ঘুম ভাঙ্গল, তখন সন্ধ্যা প্রায়। ফলে আজ তাঁর আর প্রায়ভেট পড়তে যাওয়া হল না। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। রাতে ভাল ঘুম না হবার জন্য এমন হল। 

মৌ রীতিমত প্রায় ভেটে মনাকে দেখতে না পেয়ে আশ্চর্য হয়ে গেল। তাঁর মনটা খারেপ হয়ে গেল। সে রোজকার মত গোলাপ এনেছিল কিন্তু দেওয়া হল না। বাড়ি ফিরে তাঁর বাবা-মাকে জানালো মনা আজ প্রায়ভেটে আসেনি, কোন অসুখ বিসুখ হল না তো?

তাই খোকন মিঞা মেসে ফোন করল মনার খবর নেয়ার জন্য।

মেস বয় মনাকে ডেকে আনলো। মনা সালাম দিতেই অপর প্রান্ত থেকে খোকন মিঞা বলল,

খোকন মিঞাঃ মনা কেমন আছ? তোমার শরীর খারাপ হয়নি তো?

মনাঃ না চাচ্চু। ক্লাস থেকে ফিরে খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, ঘু থেকে উঠে দেখি সন্ধ্যা হয়ে গেছে, তাই যাওয়া হয়নি। তা আপনারা ভালো তো?

খোকন মিঞাঃ ওহ আচ্ছা। ছেলে মানিষ এরকম মাঝে মাঝে হতেই পারে।

টিক আছে, ভাল থেকো, আল্লাহ হাফেজ। বলে ফোন রেখতে যাচ্ছিল, তখন মৌ বলল-

মৌঃ বাবা, আমি একটি ভাইয়ার সাথে কথা বলি?

মেয়ের কথা শুনে খোকন মিঞা রিসিভারাটি মেয়ের হাতে ধরিয়ে দিয়ে ভেতরে চলে গেলেন।

মৌঃ আসসালামু আলাইকুম।

মনাঃ ওয়ালাই কুমুসসালাম, আচ্ছা, তোমার কি একটুও হুঁশ বুদ্ধি নাই নাকি বলতো?

মৌঃ কেন?

মনাঃ কেন, বুঝছ না? আমি প্রায়ভেটে যায়নি একথা চাচা-চাচীকে কেন বলতে গেলে? চাচ্চু যদি আমাকে ফোন না করে আমার বাবাকে ফোন করতো তাহলে বাবা-মাকে কি জবাব দিতাম?

মৌঃ সরি, আমি বুঝতে পারিনি। আসলে বিকালে দেখতে না পেয়ে আমার মাথা ঠিক ছিল না

মনাঃ কি হয়েছিল মাথায়?

মৌঃ ভাল্বাসার মানুষকে একবেলা দেখতে না পেলে কি হয় আপনি কি বুঝবেন? সে জন্যই তো ----।

মনাঃ সে জন্যই তো কি?

মৌঃ আমাকে ভাল বাসেন না।

মনাঃ মানে?

মৌঃ আমি অত মানে টানে বুঝিনা। আমি যেটা বুঝি সেটা বলে ফেলেছি ব্যাস।

মনাঃ আচ্ছা, ঠিক আছে ফোন রেখে ভেতরে যাও, নইলে চাচী বলবে তুমিয়ামার সাথে কি এত কথা বলছিলা। তখন?

মৌঃ আমি সারা রাত কথা বললে ও কিচ্ছু বলবে না।

মনাঃ বলবে না মানে?

মৌঃ বলবে না মানে বলবে না।

মনাঃ বলে না কেন?

মৌঃ কারণ আপনি আমার পর না। আপন লোক।

মনাঃ ঠিক আছে কতটা আপন সময় হলে বোঝা যাবে। এখুন রাখলাম। বলে মনাই ফোন রেখে দিল।

মনা বুঝতে পারলো মৌ বাবা মায়ের একমাত্র নেয়ে হওয়ায়, তাঁর ইচ্ছামত সব কিছু করে। তাঁর বাবা-মা ও তাঁকে প্রচুর ভালবাসে।

রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে পড়তে বসে মনার পড়াতে তেমন মন বসছে না।

তবুও জোর করে কিছুটা পড়ালেখা শেষে ঘুমুতে যাচ্ছিল। এমন সময় মেস বয় এসে জানালো আপনার ফোন এসেছে।

মনাঃ কোথাকার ফোন?

 মেস বয়ঃ নাটোর থেকে কে যেন ফোন করেছে, আপনাকে চাইল।

মনাঃ ঠিক আছে চল।

মনা ফোন ধরে সালাম দিতেই অপর প্রান্ত থেকে সোহেল চৌধুরী বললেন-

সোহেল চৌধুরীঃ কেমন আছ বাবু?

মনাঃ জি বাবা, আমি ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? মা ও মনির কথা খুব কথা খুব মনে পড়ছে বাবা। 

সোহেল চৌধুরীঃ আমাদের ছেড়ে থাকনি কখন,তাই এমন হচ্ছে। ধিরে ধিরে সব ঠিক হয়ে যাবে বাবু। আমাদের ও খুব খারাপ লাগছে, কিন্তু তোমার ভালোর জন্যই তো আমরা সবাই কষ্ট করছি, তাই নয় কি?

মনাঃ হ্যাঁ বাবা।

সোহেল চৌধুরীঃ তোমার পড়া শোনা কেমন চলছে,বাবু?

মনাঃ ভাল, বাবা।

সোহেল চৌধুরীঃ তোমার খোকন চাচ্চু খোঁজ খবর নেয় না?

মনাঃ হ্যাঁ বাবা। সারাক্ষনি খোঁজ নেন।

সোহেল চৌধুরীঃ তোমার চাচ্চু বলছিলেন তুমি নাকি গতকাল প্রায়ভেটে যাওনি?

মনাঃ হ্যাঁ বাবা। বেশী রাত জেগে পোড়াশোনা করেছিলাম তাই ক্লাস থেকে ফিরে লাঞ্চ শেষে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, জেগে দেখি সন্ধ্যা হয়ে গেছে। তাই আর যাওয়া হইনি।

এই প্রথম মিথ্যা কথা বলল মনা তাঁর বাবাকে।

সোহেল চৌধুরীঃ তোমার চাচ্চু বলছিল, তুমি না হয় ওদের ওখানে শিফট কর। এমন ঘটনা আর ঘটবে না, তুমি ঘুমিয়ে পড়লেও তোমার চাচী না হয় বাড়ির আর কেউ তোমাকে ডেকে দিতে পারবে।

মনাঃ ঠিক আছে বাবা, এমন আর হবে না আশাকরি। আপাতত মেসেই থাকি। খামাখা ওনাদের কষ্ট দেওয়া ঠিক হবে না।

সোহেল চৌধুরীঃ ওকে। তোমার কোন অসুবিধা হলে এক সময় শিফট করে নিও।

মনাঃ ওকে বাবা। মাকে আমার সালাম আর মনিকে আমার আদর জানিয়ে দিবেন। আল্লাহ হাফেজ।

বলে ফোন রাখল মনা।

-------------------------

চলবে----

আসছে আগামী পর্বঃ ১৪। সাথে থাকবেন আশাকরি

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বিধাতা রাখিও তাঁরে সুখে।