1.কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয়?  সূচনাঃ-      কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয় জানতে হলে আমাদেরকে আগে জানতে হবে কাঁঠাল ও কোকাকোলার মধ্যে কী কী আছে? তাই চলুন নিচের টেবিল থেকে প্রথমে আমরা জেনে নিই, কাঁঠালের মধ্যে কী কী আছে।  প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)- কাঁঠাল এর পুষ্টিমান  শক্তি ৩৯৭ কিজু (৯৫ kcal)                                                       শর্করা চিনি ১৯.০৮ g খাদ্য তন্তু ১.৫ g স্নেহ পদার্থ ০.৬৪ g প্রোটিন ১.৭২ g                                                       ভিটামিন ভিটামিন এ সমতুল্য বিটা-ক্যারোটিন লুটিন জিয়াক্সানথিন ১% - ৫ μg১% ৬১ μg - ১৫৭ μg থায়ামিন (বি ১) ৯%- ০.১০৫ মিগ্রা রিবোফ্লাভিন (বি ২) ৫%- ০.০৫৫ মিগ্রা নায়াসিন (বি ৩) ৬%-০.৯২ মিগ্রা প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫ ) ৫%-০.২৩৫ মিগ্রা ভিটামিন বি ৬ ২৫%-০.৩২৯ মিগ্রা ফোলেট (বি ৯) ৬%-২৪ μg ভিটামিন সি ১৭%-১৩.৮ মিগ্রা ভিটামিন ই ২%-০.৩৪ মিগ্রা                                                           খনিজ ক্যালসিয়াম ২%-২৪ মিগ্রা লৌহ ২%-০.২৩ মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম ৮%-২৯ মিগ্রা ম্যাঙ্গানিজ ২%-০.০৪৩ মিগ্রা ফসফর

“কুঁড়েমির ফল”

বন্ধুরা, একটি আমার দেখা সত্য ঘটনা অবলম্বনে আজকের গল্প।
“কুঁড়েমির ফল”
পাঁচ বছরের মেয়েটি খুবিই ডানপিটে। কোন সময় চুপচাপ থাকেনা। সারাক্ষন ছুটে বেড়ায় সমস্ত বাড়িময়। রেবা খুব আদর করেন মেয়েকে। তাঁর স্বামী ইমন অবশ্য মাঝে মাঝে বিরক্তি বোধ করেন স্ত্রীর এমন আদিক্ষেতা দেখে। তিনি বলেন রেবা মেয়েকে এত আদর করনা শেষে তোমার আদরে, বাদর না হয়ে যায়।
রেবাঃ কি আবল তাবল বল আমার মেয়েকে নিয়ে? এমন কুলক্ষনা কথা আর কখনো বলবে না।
ইমনঃ ঠিক আছে। তবে পরে আফসোস কর না এই আমি বলে দিলাম।
রেবাঃ ঠিক আছে আফসোস করব না। তুমি এখন কাজে যাও তো?
ইমন রোজকার মত কাজে চলে যায়। কাজে যাবার আগে মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে বলে যেতে ভোলেনা।
সুমি মায়ের নিকট বায়না ধরে, মা আজ স্কুলে যাব না।
রেবা মেয়েকে বলে ঠিক আছ, আজ যাবি না কিন্তু কাল থেকে প্রতিদিন যাবি। সুমি আচ্ছা বলে দৌড়ে খেলতে বেরিয়ে যায়।
মাঠ থেকে ফিরে ইমন রেবাকে জিজ্ঞেস করে, সুমি কি স্কুলে গিয়েছিল?
রেবা অকপটে মেয়ের ভালমন্দ বিবেচিনা না করেই বলে ফেলে, হাঁ।
ইমন স্ত্রীর কথায় বিশ্বাস করে, নিজের খাওয়া দাওয়া সেরে আবার নিজ কাজে চলে যায়।
এভাবেই চলতে থাকে তাদের জীবন। ইমন ভাবে মেয়ের ভালই পড়াশোনা চলছে, কাজের চাপে তাঁর বাড়ি ফিরতে অনেক দেরি হয় বলে বাড়িতে এসে দেখে মেয়ে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।ফলে মেয়ের পড়ালেখা সে দেখতে পায় না।
এভাবে সুমি কখনও স্কুলে যায়, কখনও যায় না।ফলে পরিক্ষায় ভাল ফলাফল না হলেও কোন মতে পাস করে পরের ক্লাসে উঠে।প্রথম হতে দ্বিতীয়, দ্বিতীয় হতে তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেনীতে ওঠে। একদিন হঠাত সুমি স্কুলে থেকে ফিরার পথে রাস্তায় সহপাঠির ধাক্কায় পড়ে যায় এবং পা সামান্য মচকে যায়।ফলে সে আর বাড়িতে হেঁটে আসতে পারেনা, খবর পেয়ে রেবা ছুটে যায় মেয়েকে আনতে। কোলে করে সে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসে। এই অজুহাতে এখুন তাঁর স্কুল যাওয়া বন্ধ। সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকে আর রেবা মেয়েকে কোলে করে প্রসাব, পায়খানায় নিয়ে যায় এবং নিয়ে আসে।মুখে তুলে মেয়েকে খাইয়ে দেই। সুমি বিছানায় শুয়ে শুয়ে রিমোর্ট টিপে টিভি দেখে।ইমন মেয়ের এমন অবস্তা দেখে ডাক্তারের নিকট মেয়েকে নিতে চাইলে রেবা বলে আমার মেয়ে খোড়া হয়েছে এটা মানুষকে জানাতে চাই না, আমার মেয়ের যাবার দরকার নাই তুমি গিয়ে ডাক্তারকে ভালভাবে বলে ঔষুধ নিয়ে আস। অগত্যা কি আর করা ইমন ডাক্তারকে বলে ঔষুধ এনে দেই, কিন্তু কোন কাজ হয় না। মেয়ে ওঠে দাঁড়াতেই পারে না।আসলে সুমির কিছুই হইনি , সে সম্পুর্ন ভাল আছে, শুধু স্কুলে না যাবার জন্য এমন অভিনয় করে যায়, সেই সাথে মা সহায়তা করে বলে তাঁর খুব সুবিধাই হচ্ছে।এভাবে সপ্তাহ পেরিয়ে মাস, মাস পেরিয়ে বছর। এক দুই করে সাত বছর কেটে গেল। সুমি এখুন আর সত্যি সত্যি হাঁটতে বা দাঁড়াতে পারে না। তাঁর খুব ইচ্ছা করে উঠে হেঁটে বেড়াতে কিন্তু সত্যিই সে আর তা পারে না।এদিকে মেয়ের বয়স হয়েছে, পাড়া পড়শি সবাই জানে সুমি পাগলি হয়ে গেছে তাই তাঁর বিয়ে সাদিও আসে না।রেবা তাঁর যোয়ান মেয়েকে আর আগের মত কোলে নিতে পারে না । তাঁর শরিরটাও এখন বেশ খারাপ।সংসারে আর্থিক অবস্থা ভাল থাকলেও মেয়ের দুশ্চিন্তায় সেও অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
এভাবে আরও কয়েক বছর গত হলে একদিন রেবা স্বামী সংসার ছেড়ে চির দিনের জন্য পরপারে চলে গেল।
আত্মীয় স্বজন সবাই বলতে লাগলো মেয়েটার কি হবে? কে তাঁর দেখা শোনা করবে।
এদিকে সুমি মায়ের শোকে দিশেহারা।প্রায় বছর পাঁচেক পর মায়ের মৃত্যর দিন সুমি উঠে বসে মায়ের জন্য আহাজারী করে কাঁদতে থাকল। সকলে সান্তনা দিয়ে বলল , আমরা আছি মা, আমরাই তোমার দেখা শোনা করব।
কিন্তু রেবাকে দাফনের পর সবাই নিজ নিজ গৃহে ফিরে গেল।ইমন নিজের অসহায় মেয়ের কথা চিন্তা করে মনে মনে ভাবতে লাগল কি করা যায়। নিজে রান্না বান্না করে মেয়ের ঘরে খাবার দিয়ে কাজে চলে যায়।
সুমি বিছানায় বসে খাবার খায়, আর ভাবে প্রসাব পায়খানার প্রয়োজন হলে কি করবে। তাঁর ঘরের পার্শে টয়লেট।সে বুকে সাহস নিয়ে বিছানা হতে পা নামায় মাটিতে। অনেক দিন পর মাটি স্পর্শ করে তাঁর পা শিউরে ওঠে। একটু একটু করে ভর দিতে থাকে।কি আশ্চর্য সে যেন পায়ে শক্তি পাচ্ছে। তাঁর বিছানার পার্শে দরজা লাগানো লাঠিটা আঁকড়ে ধরে দাড়ায়।এবার পা তোলার পালা। সাহস করে ডান পাটা আগে তোলে, তারপর বাম পা। এভাবে সে খুড়িয়ে খুড়িয়ে টয়লেটে যেতে সমর্থ হয়। বাড়িতে কেউ ছিল না ফলে সে নিজেই নিজের সকল কাজ করা শুরু করে। ইমন বাসায় এসে দেখে খুব খুশি হয়, মেয়েকে আদর করে আর সাহস যোগায়, আর মনে মনে আশা করে এবার আমার মেয়েটা মহান আল্লাহুর রহমতে ভাল হয়ে যাবে।
ঠিক তাই হোল। প্রায় পনের দিনের মধ্যে সুমি সম্পুর্ন সুস্থ্য হয়ে গেল।
এখন মেয়ে তাঁর বাড়ির সকল কাজ করতে পারে, বাবার জন্য রান্না বান্না থেকে সব কাজিই সে নিজে করে। পাড়া পড়শিরা বলাবলি করতে লাগল দেখ, এতোদিন মেয়েটাকে জিনে ধরে ছিল, জিনটা ওর মাকে খেল আর মেয়েটাকে ছেড়ে চলে যাওয়াতে মেয়েটা এখন ভাল হয়ে গেল। সবাই এই কথাই একবাক্যে বিশ্বাস করল।
কিন্তু এতদিনে মেয়ের বয়স প্রায় ত্রিশের কোঠায়, আবার জিনে ধরা মেয়েকে কেহ বিয়ে করতে চাইত না।
এভাবে আরও কয়েক বছর গত হলে ইমন দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ফলে সৎ মায়ের সাথে সুমির প্রায় ঝামেলা হতে লাগল। অগত্য ইমন চারিদিকে লোক লাগিয়ে দিলেন মেয়ের জামাই দেখার জন্য। অনেক সম্পদের মালিক সে ফলে সম্পদ লোভি মানুষের অভাব হল না। তাছাড়া তাঁর আর কোন অসুখ নাই।
সেই গ্রামে ইমনের পাশের বাড়িতে বাইরের একজন ছেলে জাইগির থাকত। তাঁর লজিং মাষ্টার সেই ছেলেকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে সে রাজি হয়ে যায় যদিও তাঁর বয়স সুমি্র চাইতে কম।
দিন ক্ষন হল , ধুম ধাম করে মেয়ের বিয়ে দিলেন ইমন। জামাইকে তাঁর বাড়িতেই রাখলেন ঘর জামায় হিসাবে।
এদিকে ইমনের দ্বিতীয় স্ত্রীর কোল জুড়ে আরেকটি পুত্র সন্তান এল। জীবনের শেষ প্রান্তে পুত্র সন্তান পেয়ে সে খুব খুশি। মেয়ে জামাই এখুন আলাদা থাকে।
এভাবে চলছিল তাঁর ভাঙ্গা সংসার আবার নতুন হালে। কিন্তু বিধাতার চাওয়াটা ছিল অন্য।
হঠাত একদিন হার্ট এট্যাক করে মারা গেলেন ইমন। এভাবেই শেষ হয় মানুষের জীবন কাহিনি।
সুমি আজও সংসার করছে স্বামীকে নিয়ে, কিন্তু তাঁর কোলে আজও কোন সন্তান আসেনি। জেনে শুনে মাকে কষ্ট দেবার জন্য বিধাতায় হয়ত তাঁর কপালে সন্তান লেখেন নি।
শিক্ষাঃ কুঁড়েমির অভিনয় করে নিজের ক্ষমতাকে হারিয়ে দিও না, তোমার সামর্থের সঠিক ব্যাবহার কর, নচেত অন্যকে কাঁদাতে গিয়ে, নিজেই আজিবন কাঁদবে।,-----খোশবুর-২৭/১০/২০১৯

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বিধাতা রাখিও তাঁরে সুখে।