1.কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয়?  সূচনাঃ-      কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকাকোলা খেলে কি হয় জানতে হলে আমাদেরকে আগে জানতে হবে কাঁঠাল ও কোকাকোলার মধ্যে কী কী আছে? তাই চলুন নিচের টেবিল থেকে প্রথমে আমরা জেনে নিই, কাঁঠালের মধ্যে কী কী আছে।  প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)- কাঁঠাল এর পুষ্টিমান  শক্তি ৩৯৭ কিজু (৯৫ kcal)                                                       শর্করা চিনি ১৯.০৮ g খাদ্য তন্তু ১.৫ g স্নেহ পদার্থ ০.৬৪ g প্রোটিন ১.৭২ g                                                       ভিটামিন ভিটামিন এ সমতুল্য বিটা-ক্যারোটিন লুটিন জিয়াক্সানথিন ১% - ৫ μg১% ৬১ μg - ১৫৭ μg থায়ামিন (বি ১) ৯%- ০.১০৫ মিগ্রা রিবোফ্লাভিন (বি ২) ৫%- ০.০৫৫ মিগ্রা নায়াসিন (বি ৩) ৬%-০.৯২ মিগ্রা প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫ ) ৫%-০.২৩৫ মিগ্রা ভিটামিন বি ৬ ২৫%-০.৩২৯ মিগ্রা ফোলেট (বি ৯) ৬%-২৪ μg ভিটামিন সি ১৭%-১৩.৮ মিগ্রা ভিটামিন ই ২%-০.৩৪ মিগ্রা                                                           খনিজ ক্যালসিয়াম ২%-২৪ মিগ্রা লৌহ ২%-০.২৩ মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম ৮%-২৯ মিগ্রা ম্যাঙ্গানিজ ২%-০.০৪৩ মিগ্রা ফসফর

কিছুক্ষনের গল্প

সৈয়দপুর আর্মি ক্যান্টনমেন্টের পাশে কিছু দোকান আছে।
১টাকা ২-৫ টাকায় অনেক মজার মজার খাবার পাওয়া যায়।
পাশে একটা মদেরও দোকান আছে,
প্রকাশ্যে বিক্রি না করলেও অনেকেই সেখানের নিয়মিত খদ্দের।
দোখানগুলো বিহারিদের দোকান।
চাকরীর সুবাদে জেনেছি,খেয়েছিও।
মানুষ গ্যাসট্রিক নিয়েও গলা অব্দী খাচ্ছে।
নীলফামারী তে মানুষ প্রচুর শুয়োর পালে ,তবে খুব পরিস্কার শহর।
ওখানেরই একটা মহিলা কলেজের ইংরেজী সাহিত্য পড়াতাম।
আমার একটা ঠুনকো ঘর ছিল।
যদিও সেটা একটা মেস ছিল-
সেই মেসের টিনের ফুটো দিয়ে সূর্যের আলো দেখে ঘুম নিয়ন্ত্রণ করতাম।
মাঝে মাঝে বৃষ্টির ফোটা পড়ে গলা থেকে পেট পর্যন্ত ভিজে যেতাম।
সেই রাতে আর ঘুম আসতোনা, চুপচাপ হাটাহাটি করতাম।
হাতে থাকতো একটা গোল্ডলিফ।
চোখে সেই অন্ধকারের রাতেও চশমা দিতাম।
কালো ফ্রেম, গোল চশমা।
যদিও আমার চোখে কোন সমস্যা নেই, কি বুঝে জানি চশমা পড়তাম।
মাঝে মাঝে মা কল করে খুব জ্বালাতো-
আজ দুপুরে খেয়েছিলি?
আমি মিথ্যে না বলে বলতাম না মা খাইনি।
রাতে?
হ্যাঁ মা খাবো।
আর কতদিন এভাবে কাটাবি?
ভালোই তো আছি মা।
ওইসব ছাইপাশ বাদ দিয়েছিস।
আমি মিথ্যে বলতে পারতামনা,
না মা, ছেড়ে দিব।

আমার কোন কাজের লোক ছিলনা, তাই নিজের রান্না নিজেকেই করতে হোত।
যখন ক্ষুধা লাগত একটু সুঘ্রাণের স্বাদহীন রান্নায় পেট ভরতাম।
মাঝে মাঝে স্টুডেন্টরা বলত স্যার আপনার কি বয়স বাড়েনা.?
আমি বলতাম কেন বাড়ছেনা?
এই দেখ আজকে আমি ৩৬ বছর তিন মাস ২সপ্তাহ, ১৩ঘন্টা, ২৫মিনিটে পৌছুলাম।
স্টুডেন্টরা বলতো-
স্যার আপনি এই হিসেব রাখেন কি করে?
ঘড়িতে সময় দেখাটা আমাদের সাধারণ একটা প্রয়োজনে পড়ে, কিন্তু ঘড়ির কাটাটাকে একটু হিসেবে রাখলেই অনেক ভিন্ন কিছু করা যায়, যা সচরাচর কেউ করেনা।
স্টুডেন্টদের কত কৌতুহল আমায় নিয়ে।
আমি সুন্দর স্বাভাবিক সচরাচর যেমন থাকি তেমনই থাকতাম।
মানুষ আমার মাঝে সুন্দর ব্যক্তিত্ব খুঁজে পেত।
তবে খুব যে খারাপ লাগত তা না।
কত ছোট ছেলেমেয়েরা এসে তাদের প্ল্যান, উদ্ভাবন জানাতো।
আমি সাহিত্যের শিক্ষক আমি রসায়নের কি বুঝি কিন্তু রসায়ন আর বায়ালজির শিক্ষার্থীরাই বেশি আসত।
নিজেকে মাঝে মাঝে রসায়ন, বায়ালোজির গুরু মনে হত।
আসলে ছেলে-মেয়েগুলোর মেধা, পরিকল্পণা চমৎকার।


মাঝে মাঝে রানী ফোন করত।
রানী সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বান্ধবী।
ও হিন্দু আমি মুসলমান।
ফোন করেই এমন মিষ্টি করে বলবে ‘কেমন আছো’ মনে হোত যে জনম জনম থেকে তার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক।
আমি সচরাচর যেমনভাবে কথা বলি ঠিক সেভাবেই বলতাম-
হ্যাঁ বেশ ভাল আছি।
তুমি কেমন আছো? পিচ্চি কি বড় হয়ে গেছে?
হ্যাঁ, সেতো এখন তোমাকে বাবা বলে ডাকে।
সর্বনাশ কি অলক্ষণে কথা বল।
হ্যাঁ, ভাল করে তোমার ছবি দেখিয়ে চিনিয়েছি, এইটা বাবা।
এটা বাবা, বাবা বল, বাবা।
কি সর্বনাশ!
সর্বনাশের কি হোল? বাবাকে বাবা বলবেনা?
আমি ওর বাবা হলাম কিভাবে?
এভাবেই।
জামাইবাবু জানলে তোমার রক্ষে নেই।
হাহা, তোমার জামাইবাবু, মাঝে মাঝেই বলে তোমার জামায়ের বিরহ বাদ দিয়ে এইবার বিয়া করতে বল, উনার ছেলেকেও তো কিছুদিন পরে বিয়ে দিতে হবে।
তখন যদি মানুষ জানতে পারে যে উনার ছেলের বাবা বিয়েই করেনি তখন মানুষ কি বলবে?
ছিছি রানী অবিবাহিত একটা ছেলের চরিত্রে তোমরা দুজন মিলে কলঙ্ক দিলে।
রানী হোহো করে হেসে উঠে-
কিছুক্ষণ পর জামাইবাবু পাশ থেকে বলে উঠে-
বাবুর বাবা থামেন নইলে আপনার বউ হাসতে হাসতে বিছানা থেকে পড়েই যাবে।
আমারও হাসি পায়, তবে আমি হাসি নিশ্বব্দে।
রানী আবারও সেই পুরোনো কথা বলে-
শোন তোমার ছেলের নামটা তো এখনো দিলেনা, সেতো বড়ই হয়ে গেল সবাই তাকে বাবু বলেই ডাকে।
আহহা তোমরা দিয়ে দাওনা।
হ্যাঁ, বাবুর বাবার আশায় থাকতে থাকতে শেষ পর্যন্ত এটাই করতে হবে।
হেহে।
হাসবেনা, তুমিকি বলতো কি এক পৃথিবীকে নিয়ে পড়ে থাকলে বিয়ে শাদী কিচ্ছু করলেনা, এখনও কি ইচ্ছে করেনা।
কি যে বলনা-
– সবাইকে বিয়ে করতেই হবে
– এমন কোন বাধ্যবাদকতা আছে?
– ভালোই তো আছি, তাইনা বল!
– ইচ্ছে স্বাধীনতা আছে ব্যাপক।
– যা ইচ্ছে করছি, নিকোটিনের তীব্র ধোঁয়াতেও কেউ বারণ করেনা।
রানী বেশ রেগে যায়- জোর গলায় বলে-
বাদ দাও তো, তোমার কি কোন ফিল নাই নাকি? মেয়েদের দেখলে কি এখনও কোন ফিল কাজ করেনা?
– করবেনা কেন? সব ছেলেরই করে, তোমার জামাই সাহেবেরও করে, কিন্তু এইটা আমার কাছে শুধু মুহূর্তের ব্যপার, এক মুহূর্ত গেলেই কোন রুপসীকে দেখেছি ভুলে যাই।
হয়েছে হয়েছে আর ২১ বছরে ফিরতে হবেনা।
ভাবছি তোমার ছেলে বুকের দুধ ছাড়লেই তোমার কাছে পাঠিয়ে দিব।
-সর্বনাশ আমার কাছে পাঠিওনা, ভুলেও না।
-আমার সাথে থেকে থেকে আমার মত নিশাচর, বিকারগ্রস্থ মস্তিস্কের মালিক হবে।
তা হোক তাতে কোন সমস্যা নাই। শোন- ছেলের একটা নাম দিও।
-হ্যাঁ আচ্ছা।
আর একটু তিনবেলা খাবার খাওয়ার অভ্যেস কর।
-হেহে সেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে বলে আসছো।
শুনলে কোথায়, আজীবনই বলে যাব।
-তা আমি জানি।
পৃথিবীর কাছে কি পেলে বল, সেকি তোমার জন্যে অপেক্ষা করেছে? নিজেতো ঠিকি সুখের কথা ভেবেছে, নিজের মত সংসার সাঁজিয়েছে। আর তুমি?
– তুমিতো জানোই ওর সাথে আমার কোন প্রেমের সম্পর্ক ছিলনা, তারপরও কেন এভাবে বল? না প্রেম ছিল, না কখনো প্রস্তাব দিয়েছি। তবে সে জানতো তাকে আমি ভালোবাসি।
জেনে কি লাভ হোল? সেকি এখনো বসে আছে?
-তা নেই, দেখ রানী প্রত্যেকটা মানুষের কিছু নিজস্ব পছন্দ থাকে। মানুষ মাত্রই আছে। সে আমার প্রিয় মানুষ ছিল, তবে তার ছিল অন্য কেউ।
– তবে প্রেমের ব্যপারে আমরা দুজনই, একমত ছিলাম- প্রেমের কোন অর্থ নেই।
– সবকিছু আমি নিয়তির উপরে ছেড়ে দিয়েছিলাম, আমার যোগ্যতা ছিলনা, আর ওর বাসায় প্রতিনিয়ত বিশাল মান্য গন্য ব্যক্তিবর্গ বিয়ের প্রস্তাব লেগেই থাকত।
– শেষে আর অযোগ্যতার ভাড়ে তার সামনে দাঁড়াতেই পারিনি।
তাই এখন যখন যোগ্যতা হয়েছে তখন তুমি ফ্রি মাস্টার হয়ে সবাইকে ফ্রি পড়াচ্ছো?
-টাকা দিয়ে কি হয় বলতো?
-টাকার মূল্য শুধু যোগ্যতায়।সেই যোগ্যতা তো আর অর্জন সম্ভব না আমার।
হয়েছে হয়েছে।
অনেকদিন হয়েছে, তোমার সাথে বিলে যাইনা, সেই লন্ঠন, আর নৌকা, কবে আসবে?
– আসব আসব। আজকেই আসি?
সত্যি?
– হ্যাঁ। রাতের গাড়িতেই আসছি।
– আমার উপলক্ষ্যে কিছু রেঁধোনা।
বাদাম ভর্তাও না?
– না। এতে অনেক কষ্ট। তুমি বরং যা কর সবসময় তাই ই কোর।
আচ্ছা। সত্যি আসছো?
– হ্যাঁ।
ঠিক আছে আমি তাহলে আজ আর ঘুমোবোনা, তুমি এলে একসাথে সকালের নাস্তা সেড়ে ঘুম।।
– আরে নাহ ঘুমিয়ে পড়, আমি এসে অন্ধকার আলো হওয়া পর্যন্ত কাউন্টারে বসব, এরপর তোমাকে কল করব।
– আচ্ছা ঠিক আছে।

মোবাইল ফোনে নটিফিকেশন উঠে আছে, আজ সারা’র জন্মদিন।
সারাকে একটা কল করব? মেয়েটার আমার জন্যে খুব মায়া।
হ্যাঁ করি।

– হ্যালো সারা তুমি কোথায়?
আমিতো লাইব্রেরী তে।
– ও আচ্ছা, তাহলে তুমি লাইব্রেরীতেই থাকো আমি আসছি।
স্যার কিছু দরকার?
– না তেমন কিছুনা, ঢাকা যাচ্ছি ৫হাজার টাকা লাগবে, আমি আবার আগামীমাসে দিয়ে দিব।
স্যার আপনাকে এইটাও বলতে হবে কবে দিবেন। আসেনতো।
– আচ্ছা আসছি।
– দোকান থেকে একটা তিন পাউন্ডের কেক নিয়ে লাইব্রেরীতে গেলাম, সাথে রিতা, সুমনা, জুথি ছিল।
– চুপ করে আমরা লাইব্রেরীর সামনের কক্ষ সাঁজালাম।
– এরপর সারা’কে যেয়ে বললাম টাকা দাও।
সারা ছোট্ট পার্সে হাত ঢুকাতে যাবে এমন সময় বললাম আমি সামনের কক্ষে আছি আছি।
সারা কিছুক্ষণ পড়েই সামনের কক্ষে চলে এল।
আমরা একসাথে বলে উঠলাম।
হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ।
সাঁরা বেশ অবাক এবং খুশি দুটোই হয়েছিল।

কেক কাটার পর কাছে এসে টাকা বের করল, আমি বললাম সারা টাকা টাতো লাগবেনা, আমিতো ওটা এমনিতেই বলেছি, যাতে তুমি কিছু না বোঝ।
স্যার, ক’টার গাড়িতে যাবেন?
এইতো এখুনি বের হব।
এক মিনিট স্যার, আমি আসছি।
একটু পরেই একটা চিরকুট এনে দিল আমাকে, বলল-
স্যার, এটা গাড়িতে উঠে খুলবেন।
. . . . . . . . .
আমি এখন গাড়িতে বসে আছি।
কাগজটার মাঝে কি থাকতে পারে তাই ভাবছি।
ভেবে ঠিক করতে পাচ্ছিলাম না।
তাই সব রহস্যের উদঘাটন করতে চিরকুট টা খুললাম-
সেখানে শুধু একটি লাইন ছিল-

স্যার, আপনি এতো ভাল কেন? আমার খুব কষ্ট হয়।
________________

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বিধাতা রাখিও তাঁরে সুখে।